সফল হওয়ার অসাধারণ চার নীতি

সাজিদ রাজু
 | প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:২৬

ই-ভ্যালি, ই-অরেঞ্জ কিংবা ডেসটিনির মতো কোম্পানিগুলো মার খেল কেন? মোটাদাগে একটা কারণ, রাতারাতি ধনী হওয়ার প্রবণতা বা তাড়াহুড়া। মানুষ মাত্রই তাড়াহুড়া করে। বিশেষ করে কিছু পাওয়ার জন্য যে তাড়াহুড়া তা অনেক সময় তাকে আরও পিছিয়ে দেয়। কেননা তাড়াহুড়া করলে ভুল হয় বেশি। এমনই এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে।

সেখানকার উদ্যোক্তারা এক রকম ডট-কম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। যেমন এখন অনেকে ব্যাপক আওয়াজ দিয়ে ব্যবসায় নামে। অনলাইনে কিছুদিন মাতামাতি করে সটকে পড়ে। মার্কিন কোম্পানিগুলোও এমনই পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে সে সময়। তবে সেখান থেকেই এই চার শিক্ষার কথা বলেছেন ‘জিরো টু ওয়ান’ বইয়ের লেখন পিটার থিয়েল। তিনি মনে করেন, সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য চারটি শিক্ষা খুব জরুরি।

১. উন্নতির চেষ্টা করতে হবে পর্যায়ক্রমে: তার মতে উন্নতির প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত ধীরগতি। অতিমাত্রার উচ্চাকাঙ্ক্ষা অত্যাধিক প্রত্যাশার বুদবুদ তৈরি করে। কাজেই অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।

কেউ যদি দাবি করে যে সে অনেক বড় কিছু করে ফেলবে, তবে সেটা হবে বিরাট সন্দেহের ব্যাপার। আর যদি কেউ পুরো বিশ্বকেই বদলে দিতে চায় তবে তাকে অনেক বেশি বিনয়ী হতে হবে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ও ধারাবাহিক পদক্ষেপই এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র নিরাপদ উপায়।

২. মেদবিহীন নির্ঝঞ্ঝাট ও নমনীয় থাকা: সব কোম্পানিরই উচিত নির্ঝঞ্ঝাট থাকা। এর আরেকটি অর্থ হতে পারে ‘অনেকটা পরিকল্পনাবিহীন’ থাকা। কেননা আপনি কিন্তু জানেন না যে আপনার ব্যবসা আসলে কেমন চলবে। অতিরিক্ত পরিকল্পনা আপনাকে উদ্ধত ও অনমনীয় করে তুলতে পারে। এর চেয়ে আপনার উচিত হবে কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকা। সেই সঙ্গে উচিত আপনার নেওয়া উদ্যোগ থেকে ভালো-মন্দ যেকোনো কিছু আসতে পারে এমন ধারণা পোষণ করা।

৩. প্রতিযোগিতায় ভালো করার চেষ্টা করা: ব্যবসা ভালোভাবে বোঝার আগেই নতুন বাজার ধরার চেষ্টা করবেন না। ব্যবসায় সত্যিকারের মুনাফা অর্জনের একমাত্র পথ হলো যেসব পণ্যের গ্রাহক এরই মধ্যে আছে, সেসব দিয়েই শুরু করা। কাজেই আপনার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা উচিত সেসব পণ্য দিয়ে, যা সম্পর্কে গ্রাহকের আগে থেকেই জানাশোনা আছে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো এসব পণ্য বেচাবিক্রিও করে।

৪. পণ্যের ওপর নজর দিন, বিক্রির দিকে নয়: আপনার পণ্য বিক্রির জন্য যদি বিজ্ঞাপন কিংবা বিক্রয়কর্মী রাখার দরকার হয়, তবে তা খবু ভালো পণ্য নয়। প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তি হলো পণ্যের উন্নয়নের জন্য, বিতরণের জন্য নয়। বুদ্বুদেুর যুগে বিজ্ঞাপন ছিল সত্যিকার অর্থেই অপচয়।

কাজেই পর্যায়ক্রমে ব্যবসা বাড়ানোই হচ্ছে টেকসই প্রবৃদ্ধির পথ। এসব শিক্ষাব্যবসা শুরু করার জন্য এবং নতুন উদ্যোক্তাদের কাছে একধরনের নীতিমালায় পরিণত হয়েছে। যারাই এসব শিক্ষা এড়িয়ে যেতে চায় তারাই ২০০০ সালের মতো আরও একটি পরীক্ষিত বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে ধরেও নেওয়া যায়। তবে এসব নীতির বিপরীত নীতিগুলোও হয়তো আরও বেশি কার্যকর হতেও পারে।

লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, চীন আন্তর্জাতিক বেতার

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :