ঘর থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

প্রকাশ | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:৫৪ | আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:২৪

ঢাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় নাজিমুদ্দিন রোডের একটি ভবন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ‘স্বপ্ন’ নামে একটি ভবনের আট তলার একটি কক্ষ থেকে সোমবার দুপুর দুইটার দিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে থাকা মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম মাসুদ আল মাহদি অপু। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সূর্যসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়েছেন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে। তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদে।

অপু যে কক্ষে থাকতেন সেখানে আরও দুইজন থাকতেন৷ তাদের একজন আল ইমরান এবং অন্যজন জহিরুল ইসলাম।

অপুর রুমমেট জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল নয়টার দিকে আমি আমার কর্মস্থলে যাই। সেসময় অপু ভাই ঘুমিয়ে ছিলেন। দুপুরে লাঞ্চ করতে রুমে এলে দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে বারবার কল দেই। কিন্তু তিনি মোবাইল রিসিভ করেনি। রুমের দরজায় বারবার ধাক্কা দিয়েও সাড়া মেলেনি। এরপরে বাকিদের ডাকি। দরজার ফাঁক দিয়ে উনার হাত দেখতে পাই। পরে দরজা ভেঙে দেখি উনি ফ্যানের সঙ্গে গামছা দিয়ে ফাঁস দিয়েছেন।’

অপুর সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ ছিল কিনা জানতে চাইলে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘উনি আমাদের সিনিয়র ভাই৷ সবসময় পড়াশোনা করতেন। গতরাতেও বিসিআইসি'র ভাইভার জন্য কাগজপত্র গোছাচ্ছিলেন। ৪১তম বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিতে পাসও করেছেন এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্ততি নিচ্ছিলেন।’

অপুর আরেক রুমমেট আল ইমরান বলেন, ‘জহিরুল ভাই কল করে আমাকে জানায় যে অপু ভাইয়ের কী যেন সমস্যা হয়েছে। সেজন্য আমাকে দ্রুত আসতে বলেন। এসে দেখি দরজা বন্ধ। পাশের রুমের সাইদ ভাইকে ডেকে আনি। এরপরে ৮-১০ জন মিলে রুমের দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেঙে দেখি উনি (মাসুদ) ফাঁস দিয়েছেন। দরজা ভাঙার বিষয়টা আমরা ভিডিও করেছি কারণ দরজার ফাঁক দিয়ে অপু ভাইয়ের হাতটা দেখা যাচ্ছিল এতে আমরা বুঝে নিয়েছি যে কিছু একটা ঝামেলা হয়েছে।’

পাশের রুমের সহপাঠী ও সূর্যসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাইদ বলেন, দুই দিন আগেও দেশে করোনার সার্বিক অবস্থা, বেকারত্ব নিয়ে বেশ কিছু কথা হয় তার সঙ্গে। উনি হয়তো বেশ কিছুদিন ধরে আর্থিক সমস্যায় আছেন। আমার কাছে মাঝেমধ্যে টাকা ধার হিসেবে নিতেন। তবে হঠাৎ করেই আত্মহত্যার কেন করেছে এ বিষয়ে আমি নিজেও কিছু বুঝতে পারছি না।

লালবাগ বিভাগের ডিসি জসীম উদ্দিন বলেন, দুপুর দুইটার দিকে ৯৯৯ থেকে আমাদের কাছে একটি তথ্য আসে যে চাঁনখারপুলে একজন আত্মহত্যা করেছেন। পরে আমরা গিয়ে লাশের সুরতহাল করি। ছেলেটির নাম মাসুদ আল মাহদি অপু। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। তার রুমমেট ও পাশের রুমের যারা আছেন তাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা যতটুকু বুঝতে পেরেছি তাতে অপু আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছি।

(ঢাকাটাইমস/২৭ সেপ্টেম্বর/আরএল/এমআর)