ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই জানেন না তিনি মামলার বাদী

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:০১

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেন মাতুব্বরকে বাদী করে একটি মামলা করেছেন কালকিনি উপজেলা চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক। এমন অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান এবং তার ইউপি সদস্য ও সমর্থকরা।

বুধবার সকাল ১১টার দিকে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে তিনি সংবাদ সম্মেলনে মামলার কোন প্রমাণপত্র দেখাতে পারেনি।

এদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই কালকিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুকের দাবি, ফরহাদ হোসেন মাতুব্বরের নাম ব্যবহার করে কোন মামলার বাদী করা হয়নি। তিনি মিথ্যে আর উদ্ভট চিন্তা থেকে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তাকে মামলার নথিপত্র ও মামলার নাম্বার দেখাতে আহবান করেন। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর দায়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন মাতুব্বর জানান, এবছরের ২৬ জুলাই নিকার সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাসার থানাকে উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করেন। উপজেলা ঘোষণা হওয়ার পর থেকে কিছুসংখ্যক লোক ‘উপজেলা বিরোধী’ আন্দোলন করে আসছে। এতে কালকিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর গোলাম ফারুক ডাসার উপজেলার সদর দপ্তর ‘কাঁঠালতলা’ বাজার সংলগ্ন স্থানে স্থাপনের আবেদন করবে বলে তার স্বাক্ষর নেন। কিন্তু মীর গোলাম ফারুক তার অজান্তে উপজেলার বিরুদ্ধে ঢাকার একটি আদালতে ‘মামলার বাদী’ হিসেবে তার নাম লিখেন। এটা তিনি জানতেন না বলে দাবি করেন। তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে বাদী হিসেবে নাম ব্যবহার করায় তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল আজিজ ঘরামী, ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এচাহাক খান, ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হালান হাওলাদার, যুবলীগ নেতা আমিনুল সরদার, মেহেদী হাসান মিন্টু প্রমুখ।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন কালকিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর গোলাম ফারুক। তিনি বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেনকে বাদী করে কোন মামলা দেয়া হয়নি। তিনি কোন প্রমাণ দেখাতে পারবে না। অন্যের কথায় আমার বিরুদ্ধে সে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, এজন্যে তাকেও আইনের আওতায় আসতে হতে পারে। কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছনে দৌড়াচ্ছেন ফরহাদ হোসেন মাতুব্বর।’

মীর গোলাম ফারুক আরো বলেন, ‘ডাসার উপজেলা ঘোষণা হওয়ার পর থেকে সদর দপ্তর মাঝখানে হওয়ার দাবিতে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন আমাদের আন্দোলনের সাথে ছিল। সে হিসেবে আমাদের দাবি সম্বিলিত একটি স্মারকলিপিতে তিনি স্বাক্ষর করেছেন। যেটা মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি। এর বাইরে তাকে বাদী করে মামলার ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মামলায় বাদী করলে তাকে তো আদালতে চাইবে এবং উপস্থিত থাকতে হবে। সেটাও তো থাকতে হয়নি। বিষয়টি হাস্যকর।’

মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, ‘যে কোন দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলায় অবশ্যই বাদীকে উপস্থিত থাকতে হবে। তার উপস্থিতিতে একজন আইনজীবী এজাহারে স্বাক্ষর ও তার প্রমাণপত্র নেবেন। তবেই মামলা আদালত এবং থানায় রুজু হবে। যদি বাদী না-ই জানে, তাহলে কিভাবে মামলা হলো- বিষয়টি পরিষ্কার নয়।’

(ঢাকাটাইমস/২৯সেপ্টেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :