ওজন কমাতে যেসব ফল খাবেন

বিভিন্ন উৎসবে নিজেকে আকর্ষণীয় ও সুন্দর হওয়ার জন্য অনেকে রোগা হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার মধ্যেও উৎসবের সময় অনেকেই মিষ্টি খেয়ে থাকেন। তাতে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে যারা মিষ্টি খেয়ে থাকেন তারা অনায়াসে কোনও ফল ডায়েট চার্টে রাখতে পারেন। এতে শরীরে পুষ্টিও মিলবে। কারণ ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, খনিজসহ ভিটামিন। ফলের মধ্যে থাকা ফাইবার ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

তবে সব ফলই ওজন কমায় না। ওজন কমাতে মহৌষধ হিসেবে কাজ করে এমন কিছু ফল রয়েছে। প্রতিদিনের ডায়েটে এই ফলগুলো রাখলে আপনার ওজন কমতে বাধ্য। জেনে নিন কোন কোন ফল রয়েছে এই তালিকায়।

ওজন কমানোর জন্য কমলালেবুর জুড়ি মেলা ভার। দিন শুরু করতে পারেন কমলালেবু খেয়ে। কমলালেবু শরীরকে সতেজ রাখে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ফাইবার। স্ন্যাকস হিসেবেও কমলালেবু খেতে পারেন।

প্রতিদিন মিষ্টির বদলে কলা খেতে পারেন। এতে রয়েছে ভরপুর পুষ্টিগুণ। শরীরচর্চার আগে প্রতিদিন বাদামের মাখনের সঙ্গে কলা খাওয়া যেতে পারে।

আপেল লো ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবার-যুক্ত হওয়ায় এই ফল ওজন কমায়। মাঝারি মাপের একটি আপেল থেকে ১১৬ ক্যালোরি ও ৪.৪ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়। প্রতিদিনের ডায়েটে সাধারণত যে পরিমাণ ফাইবার প্রয়োজন হয়, তার পাঁচ ভাগের এক ভাগের যোগান দেয় আপেল। উচ্চ আঁশ ও ফ্লাভানয়েড পলিমারস সমৃদ্ধ, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে; যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকলে তা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রেখে ডায়াবেটিস হওয়া থেকে রক্ষা করে।

আঙুরের রস শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে খুবই উপকারি। শরীরের ওজন কমাতে এবং শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও খুবই উপকারি। ওজন কমাতে রোজ কয়েকটি আঙুর খেতেই পারেন।

বেদানা ফলে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার রয়েছে । পাশাপাশি বেদানা লো ক্যালোরি সমৃদ্ধ। ওজন কমাতে খাদ্য তালিকায় রাখুন এ ফল।

সফেদা দেহের মেটাবোলিজম হার বাড়িয়ে দেয়। শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি ফ্যাট গলাতে সফেদা বেশ কার্যকর। এতে থাকা ফাইবার দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে ও খিদে নিয়ন্ত্রণ করে।

অ্যাভোকাডোতে আছে প্রচুর ফাইবার । এটি খেলে দ্রুত ক্ষুধা পায় না। এতে থাকা মোনো-স্যাটিউরেটেড ফ্যাটি এ্যাসিড পেটে জমে থাকা মেদ কমাতে খুবই কার্যকরী।

আনারস এমন এক ফল যা পেটের মেদ কমাতে খুবই উপকারি। এ ফলে ক্যালোরির মাত্রা কম থাকে। এই ফল পেটের হজম শক্তি বৃদ্ধিসহ মেদ কমাতে বেশ উপকারী ।

পেঁপেতে ফ্যাটের পরিমাণ কম। এতে যে এনজাইম থাকে তা হজমে সাহায্য করে এবং ফ্যাট ভাঙতে পারে,যার ফলে ওজন কমে যায়। প্রতিদিন পেঁপে খেলে ১০ দিনেরে মধ্যেই এর ফল পাবেন।

নাশপাতিতে রয়েছে ফ্লাভানয়েড পলিমারস, যা ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতি ১৩৮ মি.গ্রা. বাড়তি ফ্লাভানয়েড পলিমারস ওজন কম হারে বাড়ায়।

ক্যাপসিকাম প্রতিদিন খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। ক্যাপসাইসিন দেহের বাদামি ও জমাট চর্বিকে শক্তি হিসেবে পোড়াতে শ্বেত রক্তকণিকাকে অনুপ্রাণিত করে।

তাল ফলে ক্যালোরি কম থাকে। এছাড়া ফাইবার ও সরবিটলের উপস্থিতিও থাকে তালে। এই ফল রক্তচাপ কম রাখতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতেও সাহায্য করে। ডায়বেটিক রোগী যারা ওজন ঝরাতে চায়, তাদের জন্য এই ফল আদর্শ খাদ্য।

ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল জানিয়েছে, ব্লুবেরির মধ্যে ফ্লেভানল রয়েছে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এক কাপ ব্লুবেরিতে ১০ মিলিগ্রাম অ্যনথোসিয়ানিন রয়েছে যা অনেকক্ষণ পেট ভরতি রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ব্লুবেরিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত দরকারী।

ওজন কমানোর জন্য পেয়ারার বিকল্প নেই। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফাইবার। পেয়ারা শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখে এবং রক্তে শর্করার পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে রাখে।

(ঢাকাটাইমস/৩অক্টোবর/আরজেড/এজেড)