আখাউড়ায় রঙিন মাছের চাষ

প্রকাশ | ০৫ অক্টোবর ২০২১, ০১:২৩ | আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২১, ০১:২৫

হান্নান খাদেম, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

অ্যাকুরিয়ামে নয়, ড্রাম আর পাকা চৌবাচ্চার পানিতেই ছুটাছুটি করছে রঙিন মাছ। সাদা, কালো, লাল, হলুদসহ বিভিন্ন রঙের মাছের ছড়াছড়ি। এসব বর্ণিল মাছ দেখলে চোখ জুড়ায়, মন ভরে যায়। এসব মাছের চাষ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের খড়মপুরের উদ্যোক্তা নজরুল ইসলাম ভূইয়া। শখের মাছ চাষ এখন তার বাড়তি আয়ের পথ দেখাচ্ছে। এলাকার সৌখিন মানুষ আনন্দ উপভোগ করতে রঙিন মাছ দেখতে আসেন তার বাড়িতে। 

জানা যায়, ইউটিউবে রঙিন মাছ চাষের প্রতিবেদন দেখে নজরুল ইসলামের ভালো লাগে। শখ হয় রঙিন মাছ চাষ করার। শখের বশে এক বছর আগে বাসার ছাদে চারটি রিং তৈয়ার করে আট জোড়া ঘাপটি মাছ দিয়ে চাষ শুরু করেন। তারপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন জাতের মাছ সংগ্রহ করতে থাকেন। প্রথম দিকে কিছু মাছ মারা যায়। তারপর আবার কিনে আনেন। এভাবেই দিন দিন মাছ বাড়তে থাকে। বর্তমানে ছোট বড় ৩০টি চৌবাচ্চা ও রিং-এ মাছ চাষ করছেন নজরুল ইসলাম। এখন বিভিন্ন জাতের প্রায় ১০ হাজার মাছ রয়েছে তার। এর মধ্যে মারবেল মলি, হোয়াইট মলি, ব্লাক মলি, প্লাটি, সোর্ড টেইল, ঘাপটি, পমেট, কৈ কার্প, এঞ্জেল, টাইগার ফিস, শার্ক ইত্যাদি।

এখন আর মাছ কিনে আনতে হয় না। এই মাছ থেকেই বাচ্ছা ফুটে। তাছাড়া হেচারির মাধ্যমে মাছের ডিম থেকে রেনু পোনা হয়।

 

সরজমিনে নজরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানের চারিদিকে চৌবাচ্চা, গামলা। সেখানে খেলা করছে রঙিন মাছ। একটু জায়গায়ও যেন ফাঁকা নেই। বাসার ছাদে বালি-সুরকি দিয়ে তৈরি সাতটি গোলাকার রিংয়ে রয়েছে বিভিন্ন জাতের মাছ। 

নজরুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য কাজের ফাঁকেই রঙিন মাছ চাষ করা যায়। আমি অন্য ব্যবসার পাশাপাশি মাছ চাষ করছি। এর জন্য বেশি পরিশ্রম করতে হয় না। বড় মাছকে দিনে ২ বেলা এবং বাচ্ছাকে তিন বেলা ফিড (খাবার) দিতে হয়। খাবার খরচও খুব কম লাগে। সপ্তাহে একদিন চৌবাচ্চার পানি পরিবর্তন করতে হয়। কাজ করতে করতেই তিনি এসব শিখেছেন বলে জানান।

গত ৩ মাস যাবত মাছ বিক্রি শুরু করেছি। লোকজন বাড়িতে এসে মাছ নিয়ে যায়। যারা অ্যাকুরিয়ামের ব্যবসা করেন তারা এই মাছগুলো ক্রয় করেন। তাছাড়া অনেকে শখ করে বাড়ির সৌন্দর্যের জন্য একুরিয়ামে রাখার জন্য মাছ কিনে নেন। মাছের সাইজ ভেদে প্রতি জোড়া ৫০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্তও আছে। বর্তমানে তার সংগ্রহে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার মাছ আছে। ২০/৩০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেছি। রঙিন মাছ চাষ করে লাভবান বলে জানান তিনি।

নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রথমে অল্প জায়গায় অল্প মাছ দিয়ে শুরু করলে ভালো হয়। তারপর আস্তে আস্তে শিখতে শিখতে মাছ বাড়াতে পারবে। ধৈয্য ধরে চাষ করলে সফলতা আসবেই।

(ঢাকাটাইমস/৫অক্টোবর/এলএ)