প্রবীণ সাংবাদিক রফিকুল হক ‘দাদু ভাই’ আর নেই

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০২১, ১২:৩০ | আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২১, ১২:৫৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বাংলা একাডেমি ও শিশু একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক, নাট্যকার ও দৈনিক যুগান্তরের ফিচার এডিটর রফিকুল হক দাদু ভাই মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

রবিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর মুগদার নিজ বাসায় মারা যান তিনি। তিনি দীর্ঘদিন বাধ্যর্কজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

দাদু ভাই হিসেবে পরিচিত প্রবীণ সাংবাদিক রফিকুল হক একাধারে ছড়াকার এ একজন শিশু সংগঠক।

সত্তরের দশকে গড়া শিশুকিশোরদের সংগঠন ‘চাঁদের হাটে’র প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। তার পরিকল্পনায় এবং তার তত্ত্বাবধানে দৈনিক পূর্বদেশে ‘চাঁদের হাট’ নামে ছোটদের একটি পাতা বের হতো। তখন থেকে তিনি ‘দাদু ভাই’ নামে পরিচিতি পান। পরে ১৯৭৪ সালে ‘চাঁদের হাট’ নামে শিশু সংগঠন গড়ে তোলেন।

গত বছর পরপর দুইবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সুস্থ হয়ে কর্মস্থল যুগান্তরে যোগ দিলেও বার্ধক্যসহ নানা জটিলতায় প্রায় ছয় মাস আগে মুগদার বাসায় পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন।

১৯৩৭ সালের ৮ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া রফিকুল হকের গ্রামের বাড়ি রংপুরের কামালকাচনায়। তার দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে দেশের বাইরে থাকেন।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল দেশে প্রত্যাবর্তন করে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার দেশে ফিরে আসা উপলক্ষে সে সময়ের বহুল প্রচারিত দৈনিক ‘পূর্বদেশ’ একটি বিশেষ সংখ্যা বের করে। ওই পত্রিকার প্রথম পাতায় বঙ্গবন্ধুর ছবির সাথে ‘ঘরে ফিরা আইসো বন্ধু’ শিরোনামে একটি কবিতা ছাপা হয়, যা খুবই আলোচিত হয়।

বাংলা শিশু সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রফিকুল হক দাদুভাই ২০০৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একই বছর বাংলাদেশ শিশু একাডেমি পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, চন্দ্রাবতী একাডেমি পুরস্কার, নিখিল ভারত শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন।

তিনি যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক ছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে ছিলেন। নব্বই দশকে প্রতিষ্ঠিত দৈনিক রুপালীর নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে দৈনিক জনতার নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। কাজ করেছেন দৈনিক লাল সবুজ, আজাদ, বাংলাদেশ অবজারভারে।

সত্তর দশকে শিশু কিশোরদের জনপ্রিয় ‘কিশোর বাংলা’ নামের সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকও ছিলেন তিনি।

আশির দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য ‘নিধুয়া পাথার কান্দে’ নামে একটি নাটক লিখছিলেন তিনি, যা পরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ‘বর্গি এলো দেশে’সহ তার প্রকাশিত বাইয়ের সংখ্যা সাতটি।

ঢাকাটাইমস/১০অক্টোবর/এসকেএস/ইএস