এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার

প্রকাশ | ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৬:০৯

ডা. নুসরাত সুলতানা

অপ্রয়োজনীয়, অতিরিক্ত এবং অনিয়মিত এন্টিবায়োটিক সেবনের কারণে আপনার শরীরে ব্যাকটেরিয়াগুলো অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল শিখে ফেলে এবং তাদের মাধ্যমে সৃষ্ট নতুন ব্যাকটেরিয়াও একই ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়। এভাবে তারা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তো কমিয়ে দিচ্ছেই, পাশাপাশি সেই পরিবর্তিত ব্যাকটেরিয়া অন্যদের শরীরে ঢুকে একইভাবে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে।

এভাবে একজনের শরীরে এক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ক্ষমতা লাভ করলে, সেটি অন্যের শরীরেও সংক্রামিত হচ্ছে। এভাবে মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়ছে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। আর আমরা ধাবমান হচ্ছি ভয়াবহ পরিণতির দিকে।

এক গ্রুপ চিকিৎসক যৌক্তিক এন্টিবায়োটিক দেন (ক), অন্য গ্রুপ চিকিৎসক অযৌক্তিক এন্টিবায়োটিক প্রেস্ক্রাইব করেন (খ), কোয়াকদের প্রেস্ক্রিপশনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে এন্টিবায়োটিক (গ), রোগী নিজেই দোকান থেকেই কিনে খান (ঘ)।

ক গ্রুপের অধীনে যেসব  রোগী আছেন তারা নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া এন্টিবায়োটিক সেবন করেন না। কিন্তু অন্য তিনটি গ্রুপের মাধ্যমে এন্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্ট ব্যাক্টেরিয়া সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। ক গ্রুপ এক্ষেত্রে বৃথা কষ্ট করছেন। কারণ যারা যৌক্তিকভাবে এন্টিবায়োটিক সেবন করছেন, তারা অযৌক্তিকভাবে এন্টিবায়োটিক সেবনকারীদের মাধ্যমে তৈরি হওয়া রেসিস্টেন্ট ব্যাকটেরিয়া দিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন।

ফলে বিচ্ছিন্ন ভাবে যৌক্তিক এন্টিবায়োটিক সেবন বা প্রেস্ক্রিপশন করে কোনো লাভ নেই।  এটি কঠোরভাবে একযোগে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার।

এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে একসময় আপনার শরীরে আর কোনো এন্টিবায়োটিক কাজ করবে না৷ ছোট কাঁটা ছেড়া বা সামান্য ঠান্ডা কাশিতেও মৃত্যুর মুখে পতিত হতে পারেন।

পরিশেষে, আমাদের ঠান্ডা জ্বর বেশীরভাগ সময় ভাইরাসজনিত। ৫-৭ দিনে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। আর এন্টিবায়োটিক শুধুমাত্র ব্যাক্টেরিয়াকে ধ্বংস করার জন্য। তাই দয়া করে শুধু শুধু এন্টিবায়োটিক খাবেন না।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ভাইরোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ