থ্রম্বোসিস রোগে রক্ত জমাট বেঁধে ব্রেইনস্ট্রোক হতে পারে

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১৮:১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সারা বিশ্বের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বিশ্ব থ্রম্বোসিস দিবস ২০২১ উদযাপিত হয়েছে। রক্ত জমাট বাধা বা থ্রম্বোসিস জনিত রোগ গুলো সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি উদ্দেশ্যেই এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে থ্রম্বোসিস বা রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যার ব্যাপারে সজাগ থাকা।

 

বিশ্ব থ্রম্বোসিস দিবস উপলক্ষ্যে আজ বুধবার বিএসএমএমইউয়ে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালির শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএসএমএমইউর উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, থ্রম্বোসিস জনিত রোগসমূহ সম্পর্কে রোগী, রোগীর স্বজন, স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী এবং সর্বস্তরের জনগণের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এছাড়াও  চিকিৎসা শাস্ত্রের বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ে বিশেষায়িত ক্লিনিকের মাধ্যমে থ্রম্বোসিস জনিত রোগের চিকিৎসা নিশ্চিতের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহায়তা করা হবে।

 

 

থ্রম্বোসিস বলতে রক্তনালীতে অস্বাভাবিক রক্ত জমাট বাধাকে বোঝায়। শরীরে যেকোন কাঁটাছেড়ার পরে রক্ত জমাট বেধে রক্তপড়া বন্ধ হয়। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কোন কারণে যদি অস্বাভাবিক ভাবে রক্তনালীর ভেতরে রক্ত জমাট বেধে যায়, তাহলে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। রক্ত প্রবাহিত না হবার কারণে সেখানে কোষ গুলোর মৃত্যু হতে পারে এবং আক্রান্ত অঙ্গের কার্যক্ষমতা পুরোপুরি বা আংশিক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মস্তিস্কের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হতে পারে। হৃদযন্ত্রের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার ফলে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা হার্ট এটাক হতে পারে। পায়ের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধার ফলে ডীপ ভেইন থ্রম্বোসিস  বা ডিভিটি হতে পারে। বিশেষ করে যারা লম্বা সময়ে অসুস্থতা বা অপারেশনের  কারণে শয্যাশায়ী থাকেন বা যাদের ক্যান্সার বা অন্য কোন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগ থাকে তাদের ডিভিটি হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। জমাট বাঁধা রক্তের অংশ রক্তের সাথে পরিবাহিত হয়ে ফুসফুসের রক্তনালতে আটকে ফুসফুসের রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্ঠি করে পালমোনারি এম্বালিজম করতে পারে এবং মৃত্যুও ঘটাতে পারে। চলমান কোভিড প্যান্ডেমিকে মুত্যুর বড় অংশের পেছনে এই পালমোনারি এম্বোলিজমকে কারণ মনে করা হয়ে থাকে। বর্তমান বিশ্বে মৃত্যুর বড় কারণ স্ট্রোক ও হৃদরোগের পেছনেও থ্রম্বোসিস দায়ী। থ্রম্বোসিস জনিত রোগের ভয়াবহতা বিবেচনায় এ ব্যাপারে সকলের সচেতনতা কাম্য। জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে থ্রম্বোসিসের ঝুঁকি কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি থ্রম্বোসিস জনিত জরুরি রোগের ক্ষেত্রে দ্রুত জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।

 

বিশ্ব থ্রম্বোসিসের র‌্যালির  সভাপতিত্ব করেন  বিএসএমএমইউর হেমাটোলজী বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সালাহউদ্দিন শাহ, আরো উপস্থিত ছিলেন  বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) মো. জাহিদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম,  হাসপাতাল শাখার পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নজরুল ইসলাম খান, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক মো. হারিসুল হক, অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাজমুল করিম মানিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

ঢাকাটাইমস/১৩ অক্টোবর/এএ