ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে এসআই লাকীর চাকরি: তদন্তে গড়িমসি

প্রকাশ | ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১৫:১০ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১৭:২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
প্রতীকী ছবি

পাবনার বাসিন্দা হয়ে ঢাকার ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে এবং মৃত বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের চাকরি নেন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) সুমাইয়া বেগম লাকী। এ ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তর, সিআইডি সদর দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং এই প্রতারণার তদন্ত নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

২০১৩ সালে উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) পদে বাবার মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় এবং ঢাকার ভাড়া বাসার ঠিকানা দিয়ে পুলিশ বাহিনীতে চাকরি নেন সুমাইয়া বেগম লাকী। লাকীর  বাবা মৃত আব্দুস সোবহান মোল্লা, গ্রাম- ঘোপশিলেন্দা, ডাকঘর  খানপুরা বাজার, থানা- বেড়া, জেলা-পাবনা। বেসামরিক গেজেট ২০১২ সালের ৬ মার্চ গেজেট নম্বর- ২১২৪ মতে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রকাশিত হয়। চলতি বছরের ২৪ আগস্ট সুমাইয়া বেগম লাকীর বাবার নামে ইস্যুকৃত মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট যার স্মারক নম্বর-৪৮.০০.০০০০.০০৪.৩৭.০০৪.২১.২৪২২ বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়।  

এ ব্যাপারে অভিযোগে পেয়ে প্রথমে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় লাকীকে। পরে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। 

এ ব্যাপারে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জেসমিন বেগম ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিষয়টা তদন্তাধীন। এখনও আমরা কোনো প্রতিবেদন পাইনি। প্রতিবেদন পেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ ঘটনায় গত ৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ সদর দপ্তর, সিআইডি সদর দপ্তর, বিশেষ পুলিশ সুপার রাজশাহী মেট্রোতে অভিযোগ করেন এক মুক্তিযোদ্ধা। এ অভিযোগের তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডির ঢাকা জেলার সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানকে। 

এ ব্যাপারে ঢাকা জেলার সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান ঢাকাটাইমসকে বলেন, তদন্ত আমি শুরু করেছি। আমি বিভিন্ন জায়গায় তথ্য চেয়েছি। সেখান থেকে তথ্য পেলে আমি প্রতিবেদন দেব। লাকীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ সঠিক না জাল এমন প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, আগে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে তার বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদের বিপরীতে রেজিস্ট্রেশন ছিল। কিন্তু এখন সেটা বাতিল করা হয়েছে। 

ঢাকার উত্তর শাহজাহানপুরের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার মোহাম্মদ আলী এ বিষয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ করেন।  
অভিযোগে তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ, সিআইডি, রাজশাহীতে কর্মরত নারী উপপরিদর্শক (এসআই) সুমাইয়া বেগম লাকী।  তার বাবা আবদুস সোবাহান ২০০২ সালে মারা যান। এরপর বেসামরিক গেজেট ২০১২ সালের  ৬ মার্চ ২১২৪ নম্বর গেজেট মূলে সুমাইয়া বেগম লাকী অসৎ উদ্দেশ্যে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য তার মৃত বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে গেজেট প্রকাশ করিয়ে সুশৃংখল পুলিশ বাহিনীতে অনৈতিকভাবে চাকরি নিয়েছেন। 

মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর অভিযোগ, আমার অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তদন্ত শুরু করা হয়নি। সিআইডির এএসপি আসাদুজ্জামান আমাকে চিঠি দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকেননি। 

(ঢাকাটাইমস/১৬অক্টোবর/এএ/কেআর)