সম্রাট-খালেদ-সাঈদদের পাচার শত কোটি টাকা ফেরাতে গতি

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৮:৫৭ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৯:২০

আমিনুল ইসলাম মল্লিক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া ও বহিষ্কৃত কমিশনার মোমিনুল হক সাঈদসহ আটজনের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন (সিআইডি)।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ঢাকা টাইমসকে জানিয়েছেন।

গত মাসে দেওয়া সিআইডির এই প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে জমা আছে। অবকাশকালীন ছুটির পর নিয়মিতভাবে আদালত চালু হলে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে।

সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা শত শত কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করেছেন। এসব টাকা পাঠানো হয়েছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশে।

এদের মধ্যে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট পাচার করেছেন ২৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯১ টাকা। আর যুবলীগের বহিষ্কৃত খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া পাচার করেছেন পাঁচ কোটি ৩৫ লাখ ৩হাজার ৬৯ টাকা। এ টাকাগুলো পাঠানো হয়েছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও দুবাইতে।

রাজিব হোসেন রানা সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন ৮১ লাখ টাকা। শরিফুল ইসলাম সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন ৮৩ লাখ টাকা। অপরিচিত একজন হ্যাকার ফিলিপাইনে পাঠিয়েছেন ৬৯৩ কোটি ২৬ লাখ ২০ হাজার ৭১০ টাকা ও ১৭১ কোটি ১৭ লাখ ৫৮ হাজার ২০০ টাকা।

ঢাকা দক্ষিণের সাবেক কমিশনার মোমিনুল হক সাঈদ পাচার করেছেন ২৪ কোটি ৯৯ লাখ ৮২ হাজার ৩৫৯ টাকা। মো. শাহজাহান বাবলু দুই কোটি ১০ লাখ টাকা দুবাইতে পাচার করেছেন।

এসব টাকা পাচারের ঘটনায় আটটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব টাকা ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। পাচার করা টাকার মধ্যে ইতিমধ্যে অল্পকিছু পরিমাণ উদ্ধার করা হয়েছে বলে সিআইডির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপুল পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের কাজ করছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। অর্থপাচারের ওপর দেওয়া প্রতিবেদনে নাম রয়েছে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, খালিদ মাহমুদ ভুইয়া, এনামুল হক আরমান, রাজীব হোসেন রানা, জামাল ভাটারা, বহিষ্কৃত কমিশনার মোমিনুল হক সাঈদ ও শাজাহান বাবলুর।

এর আগে বিদেশে অর্থপাচারে জড়িতদের খুঁজে বের করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেওয়া সেই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার এ তথ্য দাখিল করা হয়েছে।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সঙ্গে আরমানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঢাকায় এনে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করে র‌্যাব।

১৯৫ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে একটি মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। ক্যাসিনোকাণ্ডে খালেদ গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন। আর যুবলীগ নেতা সাঈদ পলাতক রয়েছেন।

জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ঢাকা টাইমসকে বলেন, দেশের বাইরে পাচার হওয়া সব অর্থ ফেরত আনতে কাজ করছে সরকার।

অ্যাটর্নি জেনারেল টাকা উদ্ধার কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে পাচার হওয়া টাকা উদ্ধার করতে চিঠি লিখেছি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে।

(ঢাকাটাইমস/১৭অক্টোবর/এআইএম/ডিএম)