এফআর টাওয়ারে নকশা জালিয়াতির মামলায় চারজনের বিচার শুরু

প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৩৫ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বনানীর এফআর টাওয়ার ২৩তলা পর্যন্ত বাড়াতে নকশা জালিয়াতির মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন খাদেমসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাটির বিচার শুরু হলো।

সোমবার ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক কামাল হোসেন আসামিদের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন করেন। একইসঙ্গে ১৫ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য তারিখ ধার্য করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রাজউকের ইজারা গ্রহীতা সৈয়দ মো. হোসাইন ইমাম ফারুক (এস এম এইচ আই ফারুক), রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (বর্তমান চেয়ারম্যান) লিয়াকত আলী খান মুকুল ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী সাইদুর রহমান।

২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ নিহত হওয়ার পর এই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে।

বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে ওই ভবনের জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী এসএমএইচআই ফারুক। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফআর টাওয়ার।

পরবর্তীতে রাজউকের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান জানান, বনানীর ওই ভবনটি রাজউকের অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে তৈরি করা হয়েছিল।

টাওয়ারটির ২৩ তলা পর্যন্ত বাড়াতে নকশা জালিয়াতি করার অভিযোগে ২০১৮ সালের ২৫ জুন দুদকের উপপরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক বাদী হয়ে মামলা করেন। যেখানে দণ্ডবিধির চারটি ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলাবিশিষ্ট এফ আর টাওয়ার নির্মাণ করেন। ১৯৯০ সালে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন পান এস এম এইচ আই ফারুক। পরে ১৯৯৬ সালে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন চেয়ে সংশোধিত নকশা অনুমোদনের জন্য আবেদন করেন তিনি। সংশোধিত নকশা ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী না হওয়া এবং প্রস্তাবিত ভবনের উচ্চতা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিধিনিষেধ অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এর এক মাসের মধ্যেই সংশোধিত নকশা অনুমোদন করা হয়। এ কাজে অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে। পরে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য জমির মালিক চুক্তিবদ্ধ হন আবাসন প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপের সঙ্গে। রূপায়ন ওই জায়গায় অবৈধ নকশার ভিত্তিতেই ১৮ তলা ভবন নির্মাণ করে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুসারে ভবনের দুই পাশে যে পরিমাণ জায়গা রাখার কথা তা–ও রাখা হয়নি। পার্কিয়ের জায়গার ক্ষেত্রেও রাখা হয়েছে প্রায় নির্দিষ্ট পরিমাণের এক–তৃতীয়াংশ জায়গা। আবাসিক ভবন হিসেবে অনুমোদন নেওয়া হলেও পুরো ভবনটি ব্যবহার হয়েছে বাণিজ্যিক হিসেবে।

ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/এমআর