দুই দফা বন্যায় দিশেহারা ধামরাইয়ের কলা চাষিরা

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০২১, ০০:১৮

আহমাদ সোহান সিরাজী, সাভার (ঢাকা)

অধিক মুনাফার আশায় কলা চাষ শুরু করেছিলেন ঢাকার ধামরাইয়ের কৃষক লুৎফর রহমান। কিন্তু পরপর দুই বছরের বন্যায় আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

সম্প্রতি উপজেলার সুয়াপুর ইউনিয়নের রৌহারটেক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বন্যার পানিতে কলা গাছের গোড়া পচে দুমড়ে-মুচড়ে রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক লুৎফর রহমান জানান, গত পাঁচ বছর ধরে প্রায় ১৫০ শতাংশ জমিতে কলা চাষ করে আসছিলেন তিনি। এতে প্রতিবছর প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা আয় হতো তার। কিন্তু গত বছরের বন্যায় জমিতে পানি ঢুকে মারা যায় ক্ষেতের সব কলা গাছ। পরে বন্যার পানি নেমে গেলে ফের কলা গাছ রোপণ করেন তিনি। তবে এবারের বন্যায় আবারো পানিতে তলিয়ে মরে যায় সেগুলো। এখন মূলধন হারিয়ে কি করবেন তাই ভেবে পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ‘আমার পৈত্রিক জমিতে আগে মৌসুমি ফসল রোপন করতাম। তবে প্রায় পাঁচ বছর আগে প্রথম তিন লাখ টাকা ব্যয়ে কলা চাষ শুরু করি। তারপর থেকে কলা চাষে প্রতিবছর প্রায় ৭-৮ লাখ টাকার ফলন পেয়েছি। গত বছর হঠাৎ করে আমার সব ক্ষেতে পানি ঢুকে গেলে সব গাছ মারা গেল। এতে আমার বিরাট ক্ষতি হয়। কিন্তু আবারো লাভের আশায় ধার-দেনা করে এ বছর নতুন করে গাছ লাগিয়েছিলাম, সেই গাছে ফলনও এসেছিল। সব ঠিক থাকলে ফলন্ত এসব গাছের কলা আর কয়েক মাস পরেই পাকত, এতে আমার অন্তত ৬-৭ লাখ টাকা আয় হতো। কিন্তু বন্যায় আবারো সব গাছ মরে গিয়ে এখন আমি নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।’

উপজেলার শৈলান গ্রামের কলা চাষি আব্দুস সালাম বলেন, আমার ৫০ শতাংশ জমিতে কলা চাষ করেছিলাম। আমার কলা প্রায় পাকার উপযোগী হয়েছিল। এতে ৫০০ কলার কাইন ছিল। এক লাখ টাকা দাম বলেছিল কলার বেপারীরা। কিন্তু বন্যার কারণে আমার কলা ও গাছ ডুবে গেছে। ঋণ করে আনা ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে কলা চাষ করেছিলাম। কলা বিক্রি করতে পারলে ধার শোধ দিয়ে ২৫ হাজার টাকা লাভ করতে পারতাম।

বন্যার পানিতে আমার সবই শেষ এখন কীভাবে ধারের টাকা শোধ করব- সেই চিন্তায় ঘুমাতে পারি না। এত বড় ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সামর্থ্য নেই আমার। সরকারি কোনো সহযোগিতা কখনো পাইনি আমরা। তাই সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।

এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর বন্যায় এই এলাকার অনেক চাষি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এ বছর কলা চাষ করা বাদ দিয়েছেন। ফলে নতুন করে চাষের হালনাগাদ তথ্য জানা নেই। তবে ওই কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকলে অতি সত্বর খোঁজ নিয়ে কলাচাষিদের জন্য কোন প্রণোদনা এলে তাতে তাকে যুক্ত করে নেয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/এলএ)