আলোচনায় দক্ষিণ কোরিয়ার ‘স্কুইড গেম’

বিনোদন ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১১:১০

এক দশক আগে ‘স্কুইড গেম’-এর ভাবনা মাথায় এসেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার পরিচালক হং দুং ইয়কের। নগদ অর্থের জন্য ল্যাপটপ বিক্রি করায় মাঝপথে চিত্রনাট্য লেখা বন্ধও রাখতে হয়েছিল। পরে স্থানীয় স্টুডিওর কাছে সে গল্প পেশ করা হলে প্রযোজক ও অভিনেতারা খুব একটা আগ্রহ পাননি। অবাস্তব এবং নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্লটে তারা রাজি হননি।

তবে দুই বছর আগে নেটফ্লিক্স আগ্রহ দেখায় ইয়কের দক্ষিণ কোরীয় ডিসটোপিয়ান ড্রামায়। আমেরিকান স্ট্রিমিং জায়ান্টের লক্ষ্য ছিল, আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের অরিজিনাল সিরিজ একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করুক। নেটফ্লিক্সের সেই চাহিদা পূরণ করে একের পর এক রেকর্ড গড়ে চলেছে দক্ষিণ কোরীয় সিরিজ ‘স্কুইড গেম’। আমেরিকাসহ নব্বইটি দেশে ইতিমধ্যে নেটফ্লিক্সে‌ সর্বাধিক ঘণ্টা ধরে দেখা এবং সর্বাধিক সাবস্ক্রাইবারের নিরিখে নজির গড়েছে সিরিজটি।

গত বছর ‘প্যারাসাইট’ ছবির সুবাদে প্রথমবার ইংরেজি ভাষা বহির্ভূত সেরা ছবির অস্কার ছিনিয়ে নিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার পরিচালক বং জুন হো। সমালোচকদের মতে, ‘স্কুইড গেম’ দিয়ে ওটিটি সাম্রাজ্যেও নিজেদের আসন পোক্ত করল দেশটি।

বিষয়গত দিক থেকে ‘প্যারাসাইট’ এবং ‘স্কুইড গেম’-এর মিল রয়েছে। তবে এই সাদৃশ্য নেহাত কাকতালীয় নয়। দক্ষিণ কোরিয়ায় ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে যে পাহাড়সমান অর্থনৈতিক বৈষম্য, সেই জ্বলন্ত বাস্তব বারবার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে পরিচালকদের। পাশাপাশি পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকেও নিশানা করেছে সিরিজটি।

তবে এই সোশ্যাল স্যাটায়ারের কেন্দ্রে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার শিশুদের কয়েকটি খেলা। ঋণে জর্জরিত বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বিরাট অংকের অর্থ-পুরস্কার জেতার লোভে অংশ নেয় একটি রহস্যজনক খেলায়, যেখানে প্রতি পদে মৃত্যুর হাতছানি। খেলাগুলোর বেশ কয়েকটি বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের দেশেই ছোটবেলায় খেলা হয়। তাই এই শো যতটা দক্ষিণ কোরীয়, ততটাই বিশ্বজনীন।

‘স্কুইড গেম’-এর সাফল্যের পেছনে রাজনৈতিক সমীকরণও স্পষ্ট। ২০১৫ সাল থেকে দক্ষিণ কোরীয় ড্রামা ও টেলিভিশন শোয়ের জন্য বিশাল অংকের বাজেট বরাদ্দ করেছে নেটফ্লিক্স। দক্ষিণ কোরীয় পপ ব্যান্ড বিটিএসের নজরকাড়া আবেদন রয়েছে ভারতসহ একাধিক দেশের স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে। ‘প্যারাসাইট’, ‘মিনারি’-এর মতো ছবি বিশ্বমঞ্চে সম্মানিত। তাই দক্ষিণ কোরীয় কনটেন্টের উপরে বাজি ধরা আমেরিকার কাছে এখন অনেকটাই গুরুত্ব রাখে।

অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও উঠে আসছে এই শোয়ের প্যারোডি। ভারতীয় মিমের বাজারও এখন স্কুইড জ্বরে আক্রান্ত। আবার এই সুযোগে দক্ষিণ কোরিয়ার পুঁজিবাদকে কটাক্ষ করে ‘স্কুইড গেম’-এর সাফল্যকে খাটো করে দেখাতে চাইছে উত্তর কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো। শোয়ের একটি চরিত্রের শিকড় উত্তর কোরিয়া কি না, তা নিয়েও শো জুড়ে চলেছে জল্পনা।

সিরিজের নজরকাড়া সাফল্যের সঙ্গে বিতর্কও হচ্ছে। বিশেষত, সিরিজটির ভায়োলেন্স অপরিণত মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। শোয়ে দেখানো খেলা যাতে ছোটরা অনুসরণ না করে, তার জন্য সিডনি, কাতারসহ অনেক দেশে অভিভাবকদের এরইমধ্যে সতর্ক করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :