খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকলে দেশে অরাজক পরিস্থিতি হতো না: আব্বাস

ফাইল ছবি

সরকার দেশে লুটপাটের কারখানা খুলে বসেছে- এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এখন ক্ষমতায় থাকলে দেশে কোনো অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হতো না। পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায় পেঁয়াজ, তেল, লবণ সবকিছুর ঊর্ধ্বগতি। ভুতুড়ে পানির বিল, ভুতুড়ে গ্যাস বিল।’

মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের দোয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পক্ষ থেকে এই দোয়ার আয়োজন করা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু ধর্মালম্বীদের মণ্ডপ ভাঙুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনার জন্য সরকারকে দায়ী করে বক্তব্য দেন মির্জা আব্বাস।

তিনি বলেন, সরকার হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা সৃষ্টি করে বিশ্ববাসীকে বোঝানোর চেষ্টা করছে এই দেশ একটি সন্ত্রাসী দেশ। এদেশে বিদেশি সাহায্য দরকার। আসলেই কি তা? না। আমার নেত্রী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এদেশে তিনবার রোজা এবং পূজা একসাথে পালন হয়েছে। তখন তো কোনো দাঙ্গা হয়নি। একে অপরের ধর্মকে আমরা মেনে নিয়েছি। আসল কথা হলো দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে, দুর্নীতি, লুটপাটসহ সরকারের বিভিন্ন অপকর্ম আড়াল করার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে সরকার এই সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

মির্জা আব্বাস বলেন, সামাজিক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ, বিশ্বজুড়ে সুনাম আছে। বাংলাদেশে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হলেও তারা কখনও সেটা অনুভব করে নাই। আমার সাথে বহু ক্লাসফ্রেন্ড ছিল যারা এখন মারা গেছেন। পূজা-পার্বন একসাথে পালন করেছি। আমরা তো পুজা করতে পারি না তবে তাদের উৎসাহ দিতাম।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমার এলাকায় ২৫ ভাগ হিন্দু ভোটার বসবাস করে। কেউ বলতে পারবে না যে এই এলাকায় কোনো দিন দাঙ্গা হয়েছে। যখন বাবরি মসজিদ ভাঙে আমি মির্জা আব্বাস নিজে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে তাদের পাহারা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এই হাঙ্গামার অনেকগুলো কারণ আছে। যদি হিন্দুরা চলে যায় সেই সম্পত্তি আওয়ামী লীগের লোকেরা দখল করবে। আর যদি তারা থেকে যায় মিথ্যাচার করে সেই ভোটটা তারা পাবে। কিন্তু হিন্দু ভোটাররা সেটা করেন না। তা করলে হিন্দু ভাই-বোনদের ভোটে আমরা নির্বাচিত হতাম না।

মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে বাকশালের পেট চিরে আওয়ামী লীগের জন্ম দিয়েছিল। আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার লাইসেন্স দিয়েছিল বিএনপি। বেগম খালেদা জিয়া আপনাদেরকে রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিল। অথচ সেই সুযোগটাকে অপব্যবহার করে আজকে বেগম খালেদা জিয়াকে আপনারা কারাগারে আটকে রেখেছেন। তাকে চিকিৎসার সুযোগটাও দেয়া হচ্ছে না।

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয়ে যায় তারা বিশ্ববাসীকে বলতে পারবে আমরা তো তার সাজা স্থগিত করে চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু আমরাও বলতে পারবো আপনার বেগম জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেননি।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এসএস জিলানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের পরিচালনায় মিলাদ মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, যুবদল দক্ষিণের আহবায়ক গোলাম মাওলা শাহিন প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/বিইউ/এমআর)