ইভ্যালির ‘অর্থপাচারের’ অভিযোগ তদন্ত করবে না দুদক

প্রকাশ | ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৯:৪৭ | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২১, ২০:১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির অর্থপাচারের বিষয়টির তদন্ত শুরু করলেও এখন বিষয়টি আর তদন্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইভ্যালির ৩৫০ কোটি টাকার অভিযোগ অনুসন্ধানের প্রায় তিন মাস পর এমন তথ্য জানালেন দুদক চেয়ারম্যান।

মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, ইভ্যালির অর্থপাচারের বিষয়টি দুদকের শিডিউলভুক্ত নয়। অর্থপাচারসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য অপরাধের বিষয়টি অন্য কোনো সংস্থা দেখবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইভ্যালির গ্রাহক ও মার্চেন্টের ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ পেয়ে গত ৮ জুলাই থেকে অনুসন্ধানে নামে দুদক। পরদিন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চায় দুদক। এরপর ১৫ জুলাই তাদের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আদেশ জারি করে আদালত।

ইভ্যালির অর্থপাচারের বিষয়টি নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইভ্যালির দুর্নীতির বিষয়টিকে যখন মানি লল্ডারিংয়ের কথা বলা হয়েছিল তখন আমরা তদন্তের জন্য নিয়েছিলাম। ইভ্যালির মানিলন্ডারিংয়ের বিষয়টি এখন আর দুদক দেখছে না, অন্য কোনো সংস্থা দেখছে।’

রাজারবাগের পীর এবং তার মুরিদচক্রের দ্বারা অবৈধভাবে সাধারণ মানুষের সম্পদ দখলের অভিযোগে করা রিটের প্রেক্ষিতে আদালত বিষয়টি দুদককে অনুসন্ধান করতে যে আদেশ দিয়েছেন সেই অনুসন্ধান কতদূর? জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক যেকোনো অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে। আদালতের রায় প্রতিপালনে আমাদের অনুসন্ধান করতেই হবে। আদালতের নির্দেশের বিকল্প কিছু নাই।

এ সময় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের অবৈধ সম্পদ তদন্তে দুদক যে অনুসন্ধান শুরু করেছিল সেই অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয় দুদক চেয়ারম্যানের কাছে।

জবাবে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই তদন্ত চলছে। হেফাজতে ইসলামের বিষয়টি তো অর্থপাচারের। এটাতো খুব কঠিন কাজ, সময় সাপেক্ষ। এটা ধৈর্য ধরে করতে হয়। এটা সঠিক পথেই আছে। যখন প্রয়োজন হয় আমরা ডাকব। আমাদের তো বিভিন্ন জায়গা থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে হয়। আমাদের কাছে তো কোনো তথ্য তৈরি থাকে না।’

শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর দুর্নীতির বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান। বলেন, ‘তার বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে। কোনটা কোন পর্যায়ে আছে সেটাতো হুট করে বলা যাবে না। চট করে একটা কাগজ পেলেই অনুসন্ধান হয় না। এটা যাচাইবাছাই করে দেখতে হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা নীরিক্ষা করতে হয়। তারপরই অনুসন্ধান।’

আগের চেয়ে দুদকের কাজের গতি কমেছে। অনুসন্ধান ও তদন্তেও গতি কম। এমন প্রশ্ন করা হলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘গতি কমেছে বলে তো আমার মনে হয় না। আপনি তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখেন। আমার কাছে কিন্তু এমনটিই মনে হচ্ছে।’

দুদকের মামলা অনেক আসামি ফেরারি হয়ে ঘুরলেও তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে দুদক কোনো কাজ করছে কিনা জানতে চাইলে মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, আইনে যা আছে তাই করা হবে। আমাদের সব কার্যক্রমই চলছে।

ঢাকাটাইমস/১৯অক্টোবর/এসআর/এমআর