গরু পালনে মোজাম্মেলের সাফল্য
অসচ্ছলতা থেকে মুক্তি পেতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। নানা স্বপ্নও বুনতেন। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে চাষাবাদ করে পেট চালানো দায় হয়ে পড়ত। তাই রাতে ঘুমানোর আগে দারিদ্র্যমুক্ত হওয়ার চিন্তায় ঘুম হতো না তার। এভাবেই চলে দীর্ঘদিন। অবশেষে মাত্র ২টি দেশি জাতের গরু দিয়ে অভাব মোচনের উপায় খুঁজে পান। এখন তার একটি খামার রয়েছে। তবে এ খামারটির পরিধি বাড়ানোর জন্য সরকারি-বেসরকারি নানা সংস্থার ঋণ সহায়তা পাননি তিনি। বলা যায়, শূন্য থেকে উপরে উঠে এসেছেন তিনি।
কুড়িগ্রামের চিলমারীর উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের চর পাত্রখাতা এলাকার মোজাম্মেল স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। বড় মেয়ে এইচএসসি পড়ছেন গোলাম হাবিব ডিগ্রি কলেজে। বড়ছেলে রিয়াজুল জান্নাহ দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণিতে ও আরেক ছেলে পঞ্চম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছেন।
মোজাম্মেল বলেন, ২-৩ বছর আগে আমার সংসারে চরম অভাব ছিল। এখন অভাব পালিয়ে গেছে। আমার স্ত্রী মমতাজ বেগমকে সাথে নিয়ে গরুর খামার করি। বর্তমানে তার খামারে ছয়টি গাভী ও দুইটি বাছুর রয়েছে। তবে কিছুদিন আগে পাঁচটি গরু বিক্রি করেছেন প্রায় দুই লাখ টাকায়। বাড়ির উঠানে ফাঁকা জায়গায় তার খামার করেছি।
এর আগে প্রতিদিন খামার থেকে গড়ে ১০-১২ লিটার দুধ উৎপাদন হতো। তবে বর্তমানে গরুর বাচুর বড় হওয়ায়া এখন গড়ে ৩-৪ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। গাভী পালনের পাশাপাশি এখন একটি ছাগলের খামার করার চিন্তা ভাবনা করছি। এ পর্যন্ত উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে কোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। যদি পেতাম তাহলে হয়তো খামারটি বাড়াতে পারতাম।
মোজাম্মেলের মতে, পরিশ্রম মানুষকে সফলতা এনে দেয়। জীবনে হতাশ না হয়ে পরিশ্রম করতে হবে। তাহলে সফলতা ধরা দেবে নিশ্চিত।
তার স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, আমাদের অভাব দূর হয়েছে। সঙ্গত কারণে গ্রামের মানুষের কাছে এ দম্পতি এখন রোলমডেল। আমাদের দেখাদেখিতে অনেকে গরুর খামার করার উদ্যোগ নিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ইউএলও) মোহাম্মদ রাশিদুল ইসলাম বলেন, মোজ্জামেল খামারে সহায়তা পায়নি বিষয়টি জানা ছিল না। তবে এখন কোনো প্রণোদনা বা সহায়তা এলে তাকে আমরা সহযোগিতা করব।
(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/এলএ)