বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ২২ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৫১

দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সেইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে অনার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম।

২১ অক্টোবর গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে বিকাল ৩টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনার্স ১ম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম উদ্বোধন করেন মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। একইদিন বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এ উপলক্ষে ক্যাম্পাসকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়।

বিকাল ৪টায় কেক কেটে, শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুরু হয়।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বক্তব্যে বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। শিক্ষার মানোন্নয়নে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশা করবো, এই বিশ্ববিদ্যালয় সারাদেশের কলেজগুলোর শুধু অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ দায়িত্ব পালন করবে না, পাশাপাশি একাডেমিক রিফর্মের দায়িত্বও পালন করার সুযোগ থাকা দরকার। এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই। কারণ শুধু প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করলে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা যাবে না।’

সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এটির আজ ২৯তম জন্মবার্ষিকী। এটি সত্যিই আনন্দের। শিক্ষার মানোন্নয়নে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বৃহৎ সংখ্যক গ্রাজুয়েট রয়েছেন তাদের বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করছি, যাতে শিক্ষার্থীরা উদ্যোক্তা এবং কর্মমুখি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। পাশাপাশি আমরা শিক্ষা গ্রহণের থিওরিটিক্যাল আসপেক্টের পাশাপাশি প্রায়োগিক শিক্ষা পদ্ধতির দিকে যাচ্ছি। কারণ শিক্ষাটা যেন বাস্তবমুখী ও কর্মমুখী হয়।’

শিক্ষার্থীদের মানবিক ও নৈতিক গুণাবলীর সমন্বয়ে শিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে অবশ্যই সফট স্কিলস অর্জন করতে হবে। প্রবেলেম সলভিং মেথড জানতে হবে। পৃথিবী পরিবর্তনশীল, আধুনিক শিক্ষা তাদের গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি তাদের দেশপ্রেমিক নাগরিক হতে হবে। শৈশব-কৈশর থেকেই অসাম্প্রদায়িক আদর্শে বেড়ে উঠার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এ বিষয়ে একচুল ছাড় দেয়া যাবে না।’

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার ইকো-সিস্টেম চালু করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রধানতম কাজ হচ্ছে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা। পরিবেশটা এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন গবেষণার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি হয়।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সারাদেশের কলেজগুলোতে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও অনেক স্বল্প আয়ের মানুষের সন্তানরাও এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করছেন। এই সুযোগ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উন্মুক্ত না করলে আমাদের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হতো।’

এছাড়াও আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণে শিক্ষার ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সারাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চল, হাওর-বাঁওড় এর গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইনক্লুসিভ এবং হোলিস্টিক অ্যাপ্রোচ নিয়ে কাজ করবে। এর মধ্যদিয়ে আগামী দিনে আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার শ্রেষ্ঠ জাতীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই। আজকের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অঙ্গীকার করতে চাই, বঙ্গবন্ধুর কন্যা যেভাবে অতন্ত্র প্রহরীর মতো বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত করতে চান- এই গতি অপ্রতিরোধ্য। এই গতি বিশ্বকে নাড়া দেবে। এই গতি মানবিক বাংলাদেশকে সেই জায়গায় দাঁড় করাবে, যেখানে দাঁড়িয়ে আমাদের আগামী প্রজন্ম সাহসিকতার সঙ্গে বলতে পারবে- আমি বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার, বাঙালির সন্তান। আমরা শিক্ষা ও জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে উচ্চশিক্ষার এই পাদপীঠকে আলোকবর্তিকা হিসেবে পৌঁছে দিতে চাই। এটিই হবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রক্তের ঋণ। এই ঋণ শোধ করা আমাদের দায়িত্ব।’

উপাচার্য বলেন, ‘আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত হউক, যেখানে কেউ প্রতিমার গায়ে হাত দেবে না। কেউ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেবে না। যেখানে ভাই-বোনের সম্মিলনীতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব কিছু ভুলে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাষায় আমি বাঙালি এই হবে আমাদের শ্রেষ্ঠ পরিচয়।’

আলোচনা সভা শেষে বরেণ্য রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী প্রফেসর ড. রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ফাতেমা তুজ জোহরা, কিরণ চন্দ্র রায়সহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সঙ্গীত কলেজ, সুরের ধারা কলেজের শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা, আমন্ত্রিত অতিথি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২২অক্টোবর/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

ঢাবির সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যু: তদন্ত কমিটি গঠন

বুয়েটে রাজনীতি: হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পর আইনি পদক্ষেপের ঘোষণা

মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য হলেন আতিকুর রহমান

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও দ্রুত সেবা প্রদানে নির্দেশ উপাচার্যের

বরিশালে ভিবিডির 'হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ ও সচেতনতা' বিষয়ক ক্যাম্পেইন

সনদ জালিয়াতি: কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে অব্যাহতি

প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে অনলাইনে ক্লাস নেবে কুবি

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের সংশোধিত ফল প্রকাশ

সনদ বাণিজ্য: ওএসডি হচ্ছেন কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :