টাঙ্গুয়ার হাওরে ভাসমান চায়ের দোকান

প্রকাশ | ২৩ অক্টোবর ২০২১, ০০:৫৫

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ

শহরের জীবন থেকে বিশাল হাওর, আর হাওরের স্বচ্ছ পানি, সারি সারি হিজল, করছ গাছ, গাছের ছাঁয়ায় বসে বিশুদ্ধ বাতাস প্রকৃতির এই সান্নিধ্যে গিয়ে সবাই যেন স্বর্গীয় সুখ অনুভব করে। আর এর মাঝে চায়ের কাপে চুমুক দিতে কার না মন চায়। সাথে যদি বিস্কুট আর পান, চকলেট হয়- তাহলে তো কথাই নেই; ষোল আনাই পূর্ণ হয়ে যায়। আগত পর্যটকদের বিভিন্ন পানীয়সহ সেই ইচ্ছাটা পূরণ করতেই সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ‘মাদার ফিসারিজ’ খ্যাত টাঙ্গয়ার হাওরে ছোট ছোট নৌকায় হাওরে ভেসে ভেসে পর্যটকদের নৌকা কাছে যাচ্ছে ভাসমান দোকানগুলো আর এই দোকানগুলো নজর কেড়েছে সবার।

বিশাল জলরাশির এ হাওরে গেলেই হিজল-করছ গাছের ছায়ায় ছোট ডিঙ্গি নৌকায় বিভিন্ন রকমের খাবার নিয়ে বসে আছে হাওরপাড়ের গ্রামগুলোর শিশু থেকে মধ্যবয়সী লোকজন। কোন পর্যটকের নৌকা ওয়াচ টাওয়ারের কাছে গেলেই সবাই ছুটে আসে নৌকার কাছে। কথা একটাই চা, পান, বিস্কুট, পটেটো লাগবে। যারা চাচ্ছে তাদের নৌকা থেকেই হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে চাহিদা মত। আর এভাবেই জীবিকা নির্বাহ করছে টাঙ্গুয়ার হাওরপারের কয়েকটি গ্রামের অর্ধশত পরিবারের শিশু থেকে মধ্যবয়সী লোকজন। 

এদিকে করোনা সংক্রমণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটন স্পটগুলোতে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও রাজধানী ঢাকা থেকে ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের নিয়ে বিভিন্নভাবে টাঙ্গুয়ার হাওর, শহীদ সিরাজ লেক, বারেকটিলা, যাদুকাটাসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে নিয়ে আসছেন।

ঢাকা টুরিস্ট প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান হাওরে ভাসমান দোকানের চা, পানসহ অন্যান্য খাবার খেয়ে সুন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, হাওরের ভাসমান দোকানের চা একেবারেই ভিন্ন রকম। যার কোন তুলনা হয় না। আর হাওরে নৌকায় চলে প্রকৃতির খোলা বাতাস সাথে চা- এ এক ভিন্ন রকম অনুভুতি।

আরেক পর্যটক তানবির আহমেদ বলেন, শহরে কাজের ব্যস্থতার মাঝে একটু ক্লান্তি দূর করতে চা খাই; কিন্তু হাওরে এসে এই পরিবেশে চা-বিস্কুট অন্য রকম অনুভুতি। খুবই ভাল লাগে। যা শহরের যান্ত্রিক জীবনের হোটেলের চায়ের চেয়ে হাজার গুন ভিন্ন।

হাওরে ভাসমান দোকানের চা বিক্রেতা জয়পুর গ্রামের বাহাদুর মিয়া বলেন, দোকান দিয়ে কোনরকমে আমাদের সংসার চলে। প্রথম দিকে হাওরে এসে পর্যটকরা আমাদের গ্রামে চা খাবার জন্য গিয়ে খোঁজ নিত- দোকান আছে কি না। না পেয়ে চলে যেত। এরপর থেকেই টাঙ্গুয়ার হাওরপারের কয়েকজন নৌকায় করে এই ভাসমান দোকান চালু করে। ভালই চলে তাই আমিও এসেছি। আগত পর্যটকরা আগ্রহের সাথের আমাদের কাছ থেকে চা, বিস্কুট, পানসহ অন্য জিনিস কিনছে। সারাদিন বেচাকেনা করে ভালই লাভ হয়। পর্যটক বেশি এলে বেচাকেনা বেশি হয়, লাভও হয় বেশি।

(ঢাকাটাইমস/২৩অক্টোবর/এলএ)