সুদের ফাঁদে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ

ফয়সাল হাসান, পিরোজপুর
 | প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১২:৩৪

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার জলাবাড়ী বাজার এলাকায় চলছে জমজমাট সুদের কারবার। বিনাশ্রমে অল্প সময়ের মধ্যে লাভের আশায় অনেকেই জড়িয়ে পড়ছে এ কারবারে। উপজেলার যেখানেই দারিদ্র্য সেখানেই দাদনের উদারতায় সুদের জালে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

কারবারিরা লোভনীয় অফার দিয়ে মানুষকে জড়িয়ে ফেলছে সুদের ফাঁদে। যেমন: প্রতিমাসে ১০০ টাকা জমা রাখলে আট বছর পরে পাবেন ১৯ হাজার ২০০ টাকা, এক হাজার টাকা জমা রাখলে আট বছর পরে পাবেন এক লাখ ৯২ হাজার টাকা। এই ফাঁদে পড়ে গরীর ও অসহায় মানুষদের সর্বস্বান্ত এবং অনেকে সুদের টাকা দিতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। কিন্তু উপজেলা সমবায় অফিসার মো. কামরুলকে বারবার জানানো হলেও অদৃশ্য কারণে তিনি নির্বীকার রয়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

নেছারাবাদ উপজেলার সুদ কারবারিদের মধ্যে জলাবাড়ীর সঞ্জু ঘোষ, মৃত্যুজয় ঘোষ, সাইদুল ইসলাম সাইদ, কৃষ্ণ দাস অন্যতম। মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে উচ্চহারে সুদের ফাঁদে ফেলে তাদের নিঃস্ব করার অভিযোগ রয়েছে এদের বিরুদ্ধে। সুদ গ্রহীতাদের কাছ থেকে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও বিভিন্ন ব্যাংকের ফাঁকা চেকে তাদের স্বাক্ষর নিয়ে সুদের কারবার করেন তারা। সময়মতো সুদের টাকা দিতে না পারলে ঋণগ্রস্থদের বিরুদ্ধে ইচ্ছেমতো টাকার অংক বসিয়ে বিভিন্ন কৌশলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন তারা।

উপজেলার জলাবাড়ী বাজারের রিপন, শঙ্কর মালো, সম্ভুশীল, অরুন, ইন্দ্র, দিলিপ, মিলন ডালি, বিকাশ বিশ্বাস জানান, তারা গরিব মানুষ। টাকার প্রয়োজনে সঞ্জু ঘোষ গংদের কাছ থেকে টাকা কিস্তিতে নেন। কিন্তু সঞ্জু ঘোষ এই সুযোগে তাদের কাছ থেকে ফাঁকা চেকে ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ওই ফাঁকা চেক ব্যাংকে জমা দিয়ে ডিজঅনারের মামলা ও উকিল নোটিস পাঠিয়ে ভয় দেখাচ্ছেন তাদের। এছাড়া কিস্তি বাদ গেলে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, সঞ্জু ঘোষ, মৃত্যুজয় ঘোষ, সাইদুল ইসলাম সাইদ, কৃষ্ণ দাস এরা কয়েকজন এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আইনি পদক্ষেপ না থাকায় সঞ্জু ঘোষের মতো লোকেরা এলাকায় নির্ভয়ে সুদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন। সুদের কারবারের পাশাপাশি জমিজমাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মিথ্যে মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্দে।

অভিযুক্ত সঞ্জু ঘোষ বলেন, ব্যাংকে ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ফাঁকা চেক, স্ট্যাম্প রেখে লোন দেয়। আমরাও সেভাবেই দেই।

এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, যে সব এনজিও বা সমবায় সমিতি ঋণ দেয়, এ বিষয় আমরা অবগত রয়েছি। ইতোমধ্যে একাধিক উপজেলা পরিষদে আলোচনা ও জেলা সমন্বয় সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা সবাইকে আহ্বান জানিয়েছি, যারা অতিরিক্ত সুদ নেয় অথবা তাদের দারা কেউ হয়রানির শিকার হলে, কেউ চওড়া সুদে অর্থাৎ সরকার নির্ধারিত যে সুধের হার আছে তার থেকে বেশি সুদ নিলে আমরা আমাদের কাছে অভিযোগ করুন। তদন্ত করে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

(ঢাকাটাইমস/২৪অক্টোবর/পিএল/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :