ড. কাজী খলীকুজ্জমান কথন

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১৫:২১ | আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১৬:০৫

ফাহমিন আফরোজ

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে DSCE অর্থাৎ Dhaka School of Economics -এর চেয়ারম্যান। এছাড়াও তিনি বর্তমানে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (PKSF) এর চেয়ারম্যান। তিনি আরো বহু বিশেষায়িত জনহিতকর কাজের সাথে কার্যরত। একজন বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং জলবায়ু বিশ্লেষক বিশেষজ্ঞ তিনি। টেলিভিশনেও একাধিক ভূমিকায় অংশ নিতে দেখা যায়। বাস্তব জীবনে সম্ভবত অত্যন্ত ব্যস্ত ও জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব এই ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ স্যার।

আমাকে বলা হয় এই বিশিষ্টজন সম্পর্কে কিছু লিখতে। আমি একজন সামান্য লেখিকা- কথাসাহিত্যিক। এমফিল পাস করলেও আমি কোথাও কোনো শিক্ষা প্রাঙ্গণের কোনো টিচার নই। এছাড়া আমার পরিচয় হতে পারে ওই DSCE -এর একজন কর্তব্যরত প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলীর স্ত্রী আমি। অর্থাৎ আমার স্বামীর সুবাদে তাকে চিনি আমি। বিশেষ করে ওই প্রতিষ্ঠানের একটা পিকনিক অনুষ্ঠানে আমি গিয়েছিলাম। তাঁকে দেখে আমার খুবই শ্রদ্ধা আসে। তিনি যে সমাজের একজন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী সম্মানিত মানুষ সেটি তাকে একবার দেখলেই উপলব্ধি করা যায়। তার প্রতিষ্ঠানে আমাদের একমাত্র সন্তান কিছুদিন পড়েছিল। সেও কিছু কম ভালোবাসে না ওই DSCE কে। খুবই প্রশংসা করেছে সবকিছুরই। ওই পিকনিকে এসবের প্রেক্ষিতে আমি ছোট বক্তব্যও দিয়েছিলাম মনোজ্ঞ এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। ওই পিকনিক প্রাঙ্গণটিও ছিল খুবই মনোরম। সেবারই সামনাসামনি তাকে দেখার সৌভাগ্য হয় আমার। আর টিচারদের পাশেই বসেছিলাম, যেহেতু আমি একজন শিক্ষকের স্ত্রী। ড. খলীকুজ্জমান স্যারের সাথে ম্যাডামও ছিলেন। তিনিও সেখানকার সম্মানিত টিচার। সেই সাথে ম্যাডামের দুই বোনও সেখানে ছিলেন। এক চান্সে সবাইকে দেখেছিলাম। তবে অন্য একটি সংগঠন PKSF -এর কর্ণধার তিনি। গিয়েছিলাম একবার, সেখানেও উনি বৃহৎ পরিবারে ছিলেন। সম্ভবত একটি গানের (ফোক ফ্যাস্টিভ্যাল) অনুষ্ঠান ছিল। খুবই আনন্দদায়ক ছিল সেই অনুষ্ঠান এবং পরিবেশনা। চা, কফির ব্যবস্থা ছিল।

তা সেই পিকনিক পার্টিতে বড় ভোজের আয়োজন ছিল। তৃপ্তি করে খাওয়া দাওয়া হয়। পোলাও, রোস্ট, খাসি, জর্দা, ফিরনি, মিষ্টি, কোল্ড ড্রিংকস, বোরহানি ইত্যকার পরিবেশন ছিল চমৎকার। তাদের পাশের টেবিলে আমার স্বামী ও অন্যান্য টিচারের সাথে বসেছিলাম। খেলার আয়োজনও ছিল। আমাকে বললেও অংশ নেইনি। তবে বক্তব্যতে আমন্ত্রণ করলে সাথে সাথেই একটু বলতে রাজি হয়েছি। বেশ কিছুদিন আগের কথা তো। তবুও যতদূর মনে পড়ে তার এবং তার প্রতিষ্ঠানকে নিয়েই কিছু বলেছি। আমার ছেলে নাওয়াঝিশ কিছুদিন পড়েছে, তার আব্বু সেখানকার অধ্যাপক তাই বলতে খুব ভালো লেগেছে- সুযোগ ছাড়িনি আর কি।

এছাড়া ওই গুণী ব্যক্তিকে টেলিভিশনে বহুক্ষেত্রে বহুবার দেখেছি। উনি বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। আমি সর্বশেষ স্বাধীনতা পদক অনুষ্ঠানে তাকে টিভিতে দেখেছি। তার জন্মদিন উপলক্ষে এসবই মনে পড়ছে আমার। শিশুদের অনুষ্ঠানে নিউজে তাকে টিভিতে দেখেছি। `Happy Birthday to You`, Wish করছি।

এসব ছাড়া ড. খলীকুজ্জমান আহমদ স্যারকে আমি আর পাইনি। অনেক সময় আমাকে তার কোনো অনুষ্ঠানে যেতে বলা হলেও সুবিধা হয়নি। কত সময়ে ইচ্ছে থাকলেও আমাকে বলাও হয়নি। আর স্বামী অধ্যাপক মাহবুব হয়তো তার সময় করে উঠতে পারেনি যেতে বলতে। তখন ওই পিকনিক পার্টিতে দেখেছি ড. মাহবুব আলীকে টিচার, স্টুডেন্ট বা কর্মচারী সবাই খুব পছন্দ করে। তিনি ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পারফর্মও করেন। প্রত্যেক বছরই পিকনিক হয়। আমি একবার অংশ নিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় ফেরার সময় আমরা গাড়ি করে দুজনে ওই স্পটটির আশপাশ ঘুরে ঘুরে দেখেছিলাম।

আমাকে একবার কিছু খাবার রান্না করে হটকেস, টিফিনবক্স করে তাকে দেওয়ার প্রস্তাব আসে। কিন্তু তখন আমাদের ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়র দুঃসময়ের কারণে পারা যায়নি। তাছাড়া উনি কিভাবে নিবেন, পছন্দ হয় কি না এসব ভাবনা ছিল। কিন্তু ভবিষ্যতে তাকে দেখার ইচ্ছা নিশ্চয়ই আছে। বাকি ভবিতব্য।

বর্তমানে অতিমারী কোভিড-১৯ এর কারণে অনলাইন ক্লাস হয়। লেপটপ নিয়ে বাসায় যখন আমার স্বামী ক্লাস নেন বা টিচারদের সাথে ফোনে কথা বলেন তখন প্রফেসর ড. খলীকুজ্জমান স্যারের সাথে যোগাযোগ করলে আশপাশে থাকলে শুনি বা বুঝি আর কি। টিচারদের মিটিংও হয়। সবই প্রফেশনাল আলাপ। এতদিন দূরে থেকেও কাছে ছিলাম পরিবারের সদস্যরা। তাই হয়তো স্যারের কথা কিছু লিখতে গেছি। না হলে তার মতো নামি লোককে নিয়ে এত সহজ নয় লেখা। যাক, পরিশেষে ভুলত্রুটি মার্জনীয়। আর সর্বোপরি অধ্যাপক ড. খলীকুজ্জমান আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা রইল। তিনি সবসময়ই চেয়ারম্যান হয়ে সঠিকভাবে DSCE পরিচালনা করবেন এই প্রত্যাশা রইল।

 লেখক: কথাসাহিত্যিক  ও এমফিল