ভাত কম খেলে চালের ওপর চাপ কমবে: কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১৮:৩৩

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

আমরা অনেক বেশি ভাত খাই। ভাতের এই কনজাম্পশন (খাওয়া) কমাতে পারলে চালের ব্যবহার অনেক কমে যাবে বলে মনে করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আমরা ৪০০ গ্রাম চাল খাই প্রতিদিন, পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষ ২০০ গ্রামের বেশি চাল খায় না। সেজন্য কৃষিপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পুষ্টিজাতীয় শস্য উৎপাদনে আরও উন্নতি করতে হবে।’

রবিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশের ৫০ বছর: কৃষির রূপান্তর ও অর্জন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। দৈনিক বণিক বার্তা ও বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচার জার্নালিস্ট ফোরাম যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেকটাই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সারা পৃথিবীই তা বলছে। এই যে করোনা পরিস্থিতিতেও কেউ না খেয়ে নেই, খাদ্যের সংকট নেই, হাহাকার নেই। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে আমরা পুষ্টিজাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিতে চাই।’

দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য আন্তর্জাতিক বাজার দখল করবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে না, আমরা সারা বিশ্বে খাদ্য সরবরাহ করতে পারব।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আমরা আধুনিক কৃষিতে নিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশ দানাজাতীয় খাদ্যে অনেক আগেই সফল হয়েছে। সেটাকে যদি আমরা পুষ্টিজাতীয় খাবারে নিয়ে যেতে পারি অর্থাৎ মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদিতেও স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সফল হতে হবে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশের মাটি অত্যন্ত ঊর্বর এবং এখানে বিশুদ্ধ পানি খুব সহজলভ্য। ২০ থেকে ৩০ ফুট নিচেই বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায়, যা অন্য কোনো দেশে পাওয়া যায় না। মাটির ঊর্বরতা ও পানির সহজলভ্যতার সঠিক ব্যবহারে দেশ কৃষি এগিয়ে যাবে।

দেশে কৃষি এখন সামাজিক মর্যাদা পেয়েছে। শিক্ষিত ছেলে মেয়ে এখন কৃষিকাজ করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এক সময় কৃষিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হতো। চাষা শব্দটা গালি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু এখন শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরাও কৃষিতে আসছে। তাদের নিয়ে দেশের কৃষিকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করব।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের কৃষিতে বিশাল রূপান্তর হয়েছে। ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় তিন থেকে চারগুণ। আজ আমরা বাণিজ্যিক কৃষির কথা ভাবছি।

শাহজাহান কবীর বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল এলাকায় নদীর পানি ব্যবহারের মাধ্যমে ধানের আবাদ বাড়ানো সম্ভব। ধানের এই চাষাবাদ বাড়িয়ে ক্রমবর্ধমান খাদ্যচাহিদা পূরণ করেও ২০৫০ সালে ৪৮ লাখ টন উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন করা সম্ভব।

কৃষিতে বেসরকারি খাতের অবদান অনেক উল্লেখ করে এসিআইএ অ্যাগ্রিকালচারের প্রধান নির্বাহী এফ এইচ আনসারী বলেন, বেসরকারি খাত কৃষির উন্নয়নে সরকারকে সহযোগিতা করছে। এখন ৯৫ ভাগ হাইব্রিড ধানের বীজ, ৯৬ ভাগ সবজি বীজ, ৯৯ ভাগ পাটবীজ প্রাইভেট সেক্টর সরবরাহ করে। বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সারা বিশ্বে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এফএ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রবার্ট ডি সিম্পসন, ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর ক্যাথরিন ডেভিস প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৪অক্টোবর/এসকেএস/জেবি)