চাঁদপুরে স্বামী-স্ত্রী হত্যার রহস্য উন্মোচন করল পিবিআই
চাঁদপুরের শাহরাস্তি এলাকায় চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করলো পুলিশ ব্যুরো ইনভেটিগেশন (পিবিআই)। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন আসামিকেও গ্রেপ্তার করেছে সংস্থাটি। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার রড ও চুরি হওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- মো. আবদুল মালেক, মো. ইলিয়াছ হোসেন এবং মো. বশির।
রবিবার চাঁদপুর জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে নুরুল আমিনের বাড়ির ছাদের নুরুল আমিন ও ঘরের ফ্লোরে তার স্ত্রী কামরুননাহারের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তাদের ছেলে মো. জাকারিয়া বাবু বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামালাটি শাহরাস্তি থানা পুলিশ প্রায় এক মাস তদন্ত করে। এরপর মামলাটির তদন্তাধীন অবস্থায় বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত চাঁদপুর জেলার পিবিআইকে তদন্ত করতে দায়িত্ব দেয়। এরপর পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় ও চাঁদপুরের পুলিশ সুপার খন্দকার নূর রেজওয়ানা পারভীনের সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. কবির আহমেদ মামলাটির তদন্ত করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ২২ অক্টোবর রাত আটটার দিকে লাকসাম রেলজংশন এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত মো. আবদুল মালেককে গ্রেপ্তার করেন। পরে গত ১৯ অক্টোবর বিকাল চারটার দিকে ঝালকাঠি জেলার গাবখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মামলার অপর আসামি ইলিয়াছ হোসেনকে। ২০ অক্টোবর দুপুর দুইটার দিকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন রোড এলাকা থেকে মো. বশিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে মৃত নুরুল আমিনের বিল্ডিংয়ের মূল গেইট খোলা দেখতে পেয়ে আসামিরা অতি গোপনে তার ঘরে ঢুকে চুরি করার জন্য সিঁড়ি দিয়ে ছাদের উপর উঠে অবস্থান করতে থাকেন। নুরুল আমিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে তার বাড়ির ছাদে উঠলে আসামিরা পেছন দিক থেকে রড দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে এবং গলায় মোজা পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে।
পিবিআই জানায়, পরে আসামিরা ছাদ থেকে বিল্ডিংয়ের ভেতরে ঢুকে চুরি করার উদ্দেশ্যে গোপনে একটি রুমে প্রবেশ করে ফাইল কেবিনেটের ড্রয়ার টানাটানি করতে থাকে। তখন নুরুল আমিনের স্ত্রী কামরুন নাহার কেবিনেটের ড্রয়ার খোলার শব্দ পেয়ে ঘরের লাইট জ্বালিয়ে আসামি আবদুল মালেককে দেখে চিনতে পারে। তখন আবদুল মালেক লোহার রড দিয়ে কামরুন নাহারের মাথায় আঘাত করেন। আসামির আঘাতের ফলে কামরুন নাহার ফ্লোরে পড়ে যান। পরবর্তী সময়ে আবদুল মালেক মৃত নুরুল আমিনের ব্যবহৃত একটি ওপিপিও এ ৮৩ মডেলের মোবাইল ফোন নিয়ে ছাদের উপরে উঠেন। ছাদের উপর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত লোহার রডটি উত্তর দিকে ছুঁড়ে মেরে কাঁঠাল গাছ দিয়ে নিচে নেমে পালিয়ে যান।
(ঢাকাটাইমস/২৪অক্টোবর/এএ/জেবি)