সহিংসতায় উস্কানির দায় স্বীকার সৈকত ও রবিউলের

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০২১, ২২:৩৪

রংপুর ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুপল্লিতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে উস্কানির দায় স্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা সৈকত মণ্ডল (২৪) ও স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন রবিউল ইসলাম (৩৬)। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। 

আদালতের সাধারণ নিবন্ধক মো. শহিদুর রহমান সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, সৈকত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় এবং রবিউল ইসলাম অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

সৈকত রংপুরের কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের দর্শন বিভাগ কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। ঘটনার একদিন পর ১৮ অক্টোবর তাকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার বাড়ি পীরগঞ্জের রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামে।

ওই ঘটনার পর সৈকত ও রবিউল আত্মগোপনে চলে যান। শুক্রবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাদের ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানায় এলিট ফোর্স।

র‌্যাব জানায়, স্থানীয় জনতাকে উত্তেজিত করে তোলার পেছনে ভূমিকা রাখেন সৈকত মণ্ডল ও রবিউল ইসলাম। সৈকত ফেসবুকে ফলোয়ার বাড়ানো এবং সামাজিক অবস্থান সুদৃঢ় করতে উস্কানিমূলক পোস্ট দেন। আর তার নির্দেশে স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন রবিউল ইসলাম মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ তুলে জনতাকে উত্তেজিত করেন। তারা দুজনই সেদিনের হামলার ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন।

গ্রেপ্তার দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অরাজকতা তৈরির ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের লক্ষ্যে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার এবং মাইকিং করে হামলাকারীদের জড়ো করেন বলে জানান। গ্রেপ্তার সৈকত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে স্থানীয় জনসাধারণকে উত্তেজিত করে তোলেন। তিনি হামলা ও অগ্নিসংযোগে অংশগ্রহণে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করেন। তার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করে বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন। তিনি সহযোগী রবিউলকে মাইকিং করে লোকজন জড়ো করতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন বলে জানান। ঘটনার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান।

গত ১৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিতোষ সরকার নামে এক যুবক ধর্ম অবমাননা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগ তুলে ২৮টি হিন্দু্ বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযাগের ঘটনা ঘটে। এতে ৬৬টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এ ঘটনায় পৃথক চারটি মামলা হয়। এর মধ্যে তিনটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। একটি অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলা। রবিবার পর্যন্ত এই চার মামলায় ৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান পীরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান।

(ঢাকাটাইমস/২৪অক্টোবর/জেবি)