সাতক্ষীরার চার রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন চূড়ান্ত

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১৬:৪৫ | আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১৬:৪৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার চার রাজাকারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থাটির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত সংস্থার প্রধান এম সানাউল হক এই তথ্য জানান। চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠনসহ বেশকিছু অপরাধের প্রমাণ তদন্ত সংস্থা পেয়েছে বলে জানান তিনি।

তদন্ত সংস্থার ৭৯তম প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার চার আসামির মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য তিনজন পলাতক আছেন। তাদের বিরুদ্ধে ১১১ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদন এবং চারটি ভলিউমে ১৭৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আসামির নাম আলী আকবর। তবে পলাতক তিনজনের নাম প্রকাশ করেনি তদন্ত সংস্থা।

মামলার তদন্ত করেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান কবীর। মামলায় ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

তদন্ত সংস্থা জানায়, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ ও দেবহাটা থানা এলাকার বাসিন্দা মো. আকবর আলী শেখসহ চারজনের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। চার আসামির মধ্যে আকবর আলী ছাড়া বাকি তিনজন পলাতক।

তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ-১ এ বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আনুমানিক ৪ ঘটিকার সময় রহমতুল্লা মোড়ল, তার পুত্র গোলাম মোস্তফা মোড়লকে সঙ্গে নিয়ে আকবর আলী সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন নলতা হাটে বাজার করতে যান। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছারুল মাহমুদ হাটে সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কে একটি লাইনের বাস-গাড়িতে পাকিস্তানি আর্মি আছে সন্দেহে গ্রেনেড ছুড়ে মারে। কিন্তু এতে কেউ হতাহত হয়নি। এ ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে বিকাল ৫টার দিকে আসামিরা পাকিস্তানি আর্মি ইন্দ্রনগর মাদ্রাসায় একত্রিত হয়ে নলতা হাটে আক্রমণ করে। রাজাকাররা স্বরাব্দীপুর গ্রামের মাদার আলী গাজীকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় রাজাকারদের গুলিতে ইন্দ্রনগর গ্রামের আব্দুল রহমান ওরফে মেদু মোড়ল ও রহমতুল্লাহ মোড়ল গুরুতর আহত হন। ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় রহমতুল্লাহ মোড়ল নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।

অভিযোগ- ২ এ বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৬ মে আনুমানিক ১২টার সময় সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন ইন্দ্রনগর মাদরাসার রাজাকার ক্যাম্প থেকে আসামিরাসহ পাকিস্তানি আর্মি দেবহাটা থানাধীন হাদিপুর গ্রামের ঘোষবাড়িতে হামলা করে। সেখান থেকে নরেন্দ্রনাথ ঘোষকে আটক করে বাড়ির পেছনে নিয়ে গুলি হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দেয়। এরপর তারা শরৎচন্দ্র ঘোষ, গোপিনাথ ঘোষ, হেমনাথ ঘোষ এবং ওয়াজেদ আলী বিশ্বাসকে আটক করে বাড়ির দক্ষিণ দিকে ডোবায় নিয়ে সারিবদ্ধভাবে হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে রাখে। সেখানে নরেন্দ্রনাথ ঘোষের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বাধা দিতে গেলে আসামিরা তাকে আটক করে নির্যাতন করে। ঘোষ বাড়ির মালামাল লুটপাট করে এবং অগ্নিসংযোগ করে।

(ঢাকাটাইমস/২৫অক্টোবর/জেবি)