শাহরাস্তিতে জোড়া খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২১, ২০:৩৯

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

চাঁদপুর জেলাধীন শাহরাস্তি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে চাঞ্চল্যকর আমিন দম্পতি জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় চার মাস আগে খুন হন নূরুল আমিন (৬৯) ও তার স্ত্রী কামরুন্নাহার (৫৯)। এ ঘটনার ব্যাপক তদন্ত শেষে পিবিআই চাঁদপুর জেলার কর্মকর্তারা রহস্য উদঘাটন করে।

শেষে চাঁদপুর পৌরসভার একজন মহিলা কাউন্সিলরের স্বামী ও সাবেক পুলিশ সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার গ্রেপ্তার আসামিদের কাছ থেকে আরও তথ্য উদঘাটনের জন্য রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

আসামিদেরকে মঙ্গলবার জেল হাজত থেকে পিবিআই চাঁদপুর কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানাতে চাঁদপুর জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার খন্দকার নূর রেজওয়ানা পারভিন শহরের বাবুরহাট এলাকার পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে রেজওয়ানা পারভিন বলেন, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ ঘটনায় চুরি হওয়া একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে প্রথমে এলাকার চিহ্নিত চোর মো. আবদুল মালেককে (৩৪) শাহরাস্তি উপজেলার মেহের ঘুঘূসাল গ্রাম থেকে আটক করা হয়।

মালেকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরবর্তীতে অন্য আসামি সাবেক পুলিশ সদস্য (স্থানীয় একজন মহিলা কাউন্সিলরের স্বামী) মো. ইলিয়াছ হোসেনকে ঝালকাঠি জেলার গাবখান এলাকা থেকে এবং  মো. বশিরকে চট্রগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বশিরের বাড়ি বরিশাল জেলার চরবাড়ীয়া গ্রামে।

খন্দকার নূর রেজওয়ানা পারভিন জানান, নিহত গৃহকর্তা নূরুল আমিনের লাশ গত ১ জুলাই নাওড়া তার নিজবাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার করা হলেও মূলত তাকে চলতি বছরের ২৯ জুন রাতে হত্যা করে ছাদের উপর ফেলে রাখা হয়।

একই দিন আমিনের স্ত্রী কামরুন্নাহারকে আহত রক্তাক্ত অজ্ঞান অবস্থায় ঘরের ফ্লোরের উপর থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ জুলাই তিনি ঢাকায় মারা যান।

এ ঘটনায় গত ১ জুলাই নিহতের একমাত্র ছেলে মো. জাকারিয়া প্রকাশ বাবু বাদী হয়ে শাহরাস্তি থানায় একটি হত্যা মামলা করে। মামলাটি তদন্ত করেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. কবির আহমেদ।

এই হত্যার ঘটনা শাহরাস্তি থানার পুলিশ একমাস ধরে তদন্ত করে উদঘাটন করতে না পারায় তদন্তের দায়িত্ব পড়ে চাঁদপুর পিবিআইয়ের ওপর। তারা চার মাস আগে খুন হওয়ার সেই ঘটনা অল্প সময়ে ব্যাপক তদন্তের পর একটি চুরি হওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে খুনের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। পিবিআই চুরি যাওয়া ফোনের সূত্র ধরে খুনিকে শনাক্ত করে। জব্দ করা হয় খুনে ব্যবহার করা রডটি।

৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুজন তালুকদার বলেন, মূলত মালেক এলাকার ছিঁচকে চোর। গত ২৯ জুন নাওড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমিনের বাড়িতে চুরির উদ্দেশ্যে ঢুকে। চুরি করার একপর্যায়ে মালেক ধরা পড়ে গেলে নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী কামরুন নাহারের মাথায় আঘাত করে হত্যা করার চেষ্টা করেন। এতে ঘটনাস্থলেই নুরুল আমিন মারা যান এবং তার স্ত্রী কামরুন নাহারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। তিনদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান কামরুন নাহার।

(ঢাকাটাইমস/২৫অক্টোবর/কেএম)