ঢাকায় ৪ দিনের তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ব সম্মেলন শুরু ১১ নভেম্বর

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৪:২৮ | প্রকাশিত : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৪:১৮

১১ নভেম্বর থেকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে তথ্যপ্রযুক্তির বিশ্ব সম্মেলন ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজির (ডব্লিউসিআইটি) ২৫ তম আসর। দ্য ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে এই সম্মেলনের দেশীয় আয়োজক বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি। অংশীদার হিসেবে আরো আছে বেসিস, বাক্কো, ই-ক্যাব এবং আইএসপিএবি।

'আইসিটি দ্য গ্রেট ইকুলাইজার' স্লোগানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিক হিসেবে খ্যাত এ আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে অনলাইনেও সম্মেলনে যুক্ত হওয়া যাবে। 'ডব্লিউসিআইটি ২০২১' সম্মেলনের একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া এবং ওশেনিয়া অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘অ্যাসোসিও ডিজিটাল সামিট ২০২১'।

৪ দিনের এ সম্মেলনে থাকছে মোট ৩০টি সেমিনার, মিনিস্টারিয়াল কনফারেন্স, বিটুবি সেশন। অনলাইনে নিবন্ধিত হয়ে এই সেমিনারগুলোতে অংশ নেয়া যাবে।

১১ নভেম্বর মিনিস্টারিয়াল কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন।

২৬ অক্টোবর মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ডব্লিউসিআইটি-২০২১ এর বিস্তারিত জানানো হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ভার্চুয়ালে যুক্ত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আব্দুল মান্নান, বিসিএস সভাপতি শাহিদ-উল-মুনীর।

সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালে আরো যুক্ত ছিলেন, উইটসার সেক্রেটারি জেনারেল জেমস এইচ পয়সান্ট।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রযুক্তিগতভাবে আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে। ফলে এই ধরনের তথ্যপ্রযুক্তির আন্তর্জাতিক সম্মেলন বাংলাদেশ করতে যাচ্ছে। দেশে এই আয়োজন প্রমাণ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তব।

পলক বলেন, বাংলাদেশ আইসিটিকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করে শ্রম নির্ভর অর্থনীতি থেকে প্রযুক্তি নির্ভর অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি জানান, প্রযুক্তির অলিম্পিক খ্যাত, ডব্লিউসিআইটি ২০২১ আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার আশা করছে এই সম্মেলনের মাধ্যমে এখাতে বাংলাদেশ অনেক ধরনের জ্ঞান অর্জন করতে পারবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ডব্লিউসিআইটি ২০২১ উৎসবে প্রতিদিন সেমিনারের পাশাপাশি থাকছে বিশেষ আয়োজন। এ বিশেষ আয়াজনের প্রথম দিন থাকবে-‘ডিজিটাল বাংলাদেশ নাইট’। এতে বাংলাদেশের বিগত ১২ বছরের তথ্যপ্রযুক্তিতে অগ্রগতির সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

১২ নভেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে স্বাধীন সর্বোভৌম রাষ্ট্র ও তথ্য প্রযুক্তিতে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর গৃহিত উদ্যেগসমূহ উপস্থাপন করা হবে।

এ দিন 'অ্যাসোসিও অ্যাওয়ার্ড নাইট' অনুষ্ঠানে এশিয়া-ওশেনিয়া অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।

১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অগ্রগতি, অর্জন-গৌরবের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। একই দিনে 'উইটসা আইসিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড নাইট' অনুষ্ঠানে সারা বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেয়া হবে।

১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে ডব্লিউসিআইটি এর রজত জয়ন্তী উদযাপিত হবে।

আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম জানান, ৪ দিনের এ বিশ্ব সম্মেলনের বিভিন্ন সেমিনারে অংশগ্রহণ করবেন সারাবিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

আধুনিক ইন্টারনেটের অন্যতম জনক ভিন্টনগ্ৰেসার্ফ ও রবার্ট কান সেমিনারে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকবেন। এই প্রথমবারের মতো একই প্লাটফর্মে তাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন আধুনিক ইন্টারনেটের অন্যতম জননী ড. রাদিয়া পারম্যান ও ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের উদ্ভাবক স্যার টিমোথি বারনার্স লি।

ইন্টেল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ওমর এস ইশরাক ও নাসার সদর দপ্তরের এজেন্সি বাজেট, স্ট্র্যাটেজি ও পারফর্মেন্সের ডেপুটি সিএফও ডাউগ কমস্টক সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।

'অন্যভাবে সক্ষম' ব্যক্তিদের জন্য নিউইয়র্ক সিটি মেয়র অফিসের কমিশনার ভিক্টর ক্যালিস ভবিষ্যতে স্মার্ট সিটি বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন।

ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) এর চিফ স্টাডি গ্রুপস ডিপার্টমেন্টের বিলেল জামৌসি বক্তৃতা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

আইএমডি স্মার্ট সিটি অবজারভেটরির সভাপতি ড. ব্রুনোল্যানভিন একটি সেমিনারে অংশ নেবেন। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনলাইনে বিভিন্ন বক্তা একাধিক সেমিনারে সংযুক্ত হবেন।

বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বিগত প্রায় ১২ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশের যে অর্জন তা এই সম্মেলনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বে 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' হিসেবে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

সম্মেলনটি ফিজিক্যাল ও ভার্চুয়াল-উভয় প্লাটফর্মে আয়োজন করা হয়েছে। ফি পরিশোধ করে ফিজিক্যালি এবং ফ্রিতে ভার্চুয়ালে সেমিনারগুলোতে অংশ নেয়া যাবে।

বিসিএস সভাপতি শাহিদ-উল-মুনীর তার বক্তব্যে বলেন, এই আয়োজন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বচ্ছ ধারণা দেবে। পাশাপাশি এতে অংশ নিয়ে বিশ্ব প্রযুক্তির সর্বশেষ খবর জানা যাবে।

প্রদর্শনী উপভোগ করার জন্য অ্যাপ উন্মুক্ত করা হয়েছে। গুগল প্লে স্টোর ও আইফোনের অ্যাপ স্টোর থেকে wcit2021 নামের অ্যাপটি বিনামূল্যে ডাউনলোড করে ইন্সটল করা যাবে। তবে ব্যবহারের পূর্বে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। এছাড়াও www.wcit2021.com.bd ওয়েবসাইট ভিজিট করে ভার্চুয়ালি সম্মেলন ও প্রদর্শনী ঘুরে আসা যাবে।

ফিজিক্যাল এবং অনলাইন রেজিস্ট্রেশন-সহ ডব্লিউসিআইটি সম্মেলনের যাবতীয় তথ্য www.wcit2021.org.bd ওয়েবসাইটটিতে পাওয়া যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬অক্টোবর/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা