গণঅধিকার পরিষদের নীতি

দুবারের বেশি সরকারপ্রধান ও পাঁচবারের বেশি দলপ্রধান নয়

প্রকাশ | ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৭:১৪ | আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১৯:৩৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি সরকারপ্রধান ও পাঁচবারের বেশি কোনো দলের প্রধান থাকতে পারবেন না। আবার দলীয় প্রধান এবং সরকারপ্রধান এই দুই পদে একজন ব্যক্তি থাকতে পারবেন না। দলের ২১ দফা নীতি-আদর্শের খসড়ায় এমনই বিধি সংযুক্ত করেছে সদ্য আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দল গণঅধিকার পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের জামান টাওয়ারে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করা হয়। গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক হলেন রেজা কিবরিয়া এবং সদস্যসচিব সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।

অনুষ্ঠানে লিখিত খসড়া পড়ে শোনান নবগঠিত দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেদ খান। তাতে দেশের শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে বলা হয়, ‘শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিমূলক সরকার ও গণপ্রতিনিধিত্বশীল কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় গঠনতান্ত্রিক সংস্কার সম্পন্ন করা। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধন করা। রাষ্ট্রপতি কিংবা সরকারপ্রধান একই সঙ্গে দলীয় প্রধান হতে পারবেন না; কোনো ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি (৫ গুনন ২= দশ বছর) সরকারপ্রধান কিংবা পাঁচ মেয়াদের বেশি (২ গুনন ৫= দশ বছর) দলীয় প্রধান বা অন্য কোনো পদ বা একাধিক পদে মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।’

অনুষ্ঠানে দলীয় ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সদস্যসচিব নুরুল হক নূর। তিনি বলেন, ‘৫০ বছর হলো বাংলাদেশের বয়স। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা আজ প্রিয় দেশবাসীর সামনে হাজির হয়েছি। মহান সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা করে, আমূল বদলে দেয়ার বার্তা নিয়ে, নতুন করে বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে।’

৮৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে নানা পেশার মানুষ জায়গা পেয়েছেন জানিয়ে নুর বলেন, গণ অধিকার পরিষদ এমন একটি রাজনৈতিক দল হবে যেখানে দলীয় সর্বশেষ সদস্যও এ দলের প্রধান হওয়ার দাবি রাখেন।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব বলেন, ‘আজ সকলের সম্মুখে দাঁড়িয়ে এই প্রত্যয় ঘোষণা করছি যে, আমরা নানান ক্ষেত্রে সৃষ্টি হওয়া বহুস্তরবিশিষ্ট বৈষম্য লাঘব করে বাংলাদেশকে মানবিক উন্নয়নের প্রগতিশীল ধারায় স্থাপন করব ইনশাআল্লাহ।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গণঅধিকার পরিষদের আহ্ববায়ক রেজা কিবরিয়া জানান, দলের এখনো নিবন্ধন নেওয়া হয়নি। নিবন্ধনের জন্য সব নিয়ম মেনে শিগগিরই আবেদন করা হবে। নিবন্ধন না পাওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও জানান তিনি।

রেজা কিবরিয়া এর আগে ড. কামাল হোসেনের গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সেখান থেকে সরে এসে নতুন করে দল ঘোষণা করা হলো। এ দল ছেড়ে আবার নতুন কোনো দলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, আমি এই দলের সঙ্গেই আছি।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে রেজা কিবরিয়া জানান, তিনি নির্বাচন কমিশন নিয়ে আন্দোলন করা তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না। বলেন, ‘আমাদের আসল দাবি হলো আমরা একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই। জাতিসংঘের পরিচালিত একটি নির্বাচন ব্যবস্থা আমরা চাই। এটা ছাড়া নির্বাচনে নামার কোনো মানে হয় না। যারা এর আগে দুবার প্রতারণা করেছে তারা যে আবার করবে না সেটার ভরসা আমি করি না। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে অন্য সব দলের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব। আমি আশা করি, দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে।’

‘গণঅধিকার পরিষদ’ কোনো দলের সঙ্গে জোট করবে কি না এবং নির্বাচন কেন্দ্রিক ভাবনার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘কার সঙ্গে জোট করব সেটা পরিস্থিতি দেখে আমরা ঠিক করব। আমাদের পরিকল্পনা ৩০০ আসনে এই মুহূর্তে প্রার্থী দেয়া। তবে পরিস্থিতির ওপর তা নির্ভর করছে।’

দলীয় আর্থিক দিকটি কীভাবে পরিচালিত হবে জানতে চাইলে গণঅধিকার পরিষদের এই আহ্বায়ক বলেন, ‘দলটি যেহেতু গণমানুষের, সেহেতু গণমানুষের টাকায় এই দল পরিচালিত হবে। কোটিপতিদের টাকা নিয়ে আমরা দল চালাব না।’

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তবে তিনি দলের কোনো পদে থাকছেন না। কেবল সমর্থন দিতে এ আয়োজনে তিনি এসেছেন বলে জানান ডা. জাফরুল্লাহ।

(ঢাকাটাইমস/২৬অক্টোবর/কারই/মোআ)