মঙ্গলবারও জামিন হলো না আরিয়ানের

বিনোদন ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ২১:৩৫ | প্রকাশিত : ২৬ অক্টোবর ২০২১, ২১:২০

তিন দফায় নিম্ন আদালতে আবেদন করে জামিন না পেয়ে অবশেষে হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান। মঙ্গলবার হাইকোর্টে তার জামিন শুনানি ছিল। কিন্তু এদিন স্থগিত রইল শাহরুখপুত্রের জামিনের শুনানি। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বোম্বে হাইকোর্টে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের সওয়াল জবাব চলে। এরপর বিচারক নিতিন সাম্বর জানিয়ে দেন, বুধবার দুপুর আড়াইটায় ফের আরিয়ানের মামলার শুনানি হবে।

মঙ্গলবার আরিয়ানের জামিনের বিরোধিতা করে মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এনসিবি)জানায় যে, তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। তিনি মাদকদ্রব্য সেবনের পাশাপাশি কেনা-বেচাও করেন। তাই আরিয়ান জামিন পেলে তিনি সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন।

এদিকে, গত রবিবার মাদক এই মামলার সাক্ষী তার বয়ান পরিবর্তন করেছেন। এনসিবির তরফ থেকে দাবি করা হয় যে, আরিয়ান তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। তথ্য লোপাটেরও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এনসিবি। এমনকি শাহরুখ খানের ম্যানেজার পূজা দাদলানির বিরুদ্ধেও সাক্ষীকে প্রভাবিত করার অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি।

মঙ্গলবার আদালতে আরিয়ানের আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহাতগি আরিয়ানের সপক্ষে বলেন, ‘ইভেন্ট ম্যানেজার প্রতীক গাবার আমন্ত্রণে মাদক পার্টিতে গিয়েছিলেন আরিয়ান। একটি বিজ্ঞাপনের কারণে ২ অক্টোবর প্রতীকের অনুরোধে ওই পার্টিতে যান আরিয়ান ও আরবাজ। পার্টি শুরু করার আগেই আটক করা হয় তাদের। সেদিন আরিয়ানের কাছ থেকে কোনো রকমের মাদক পায়নি এনসিবি। তাই আরিয়ানকে গ্রেপ্তার করার কোনো কারণই ছিল না এনসিবির কাছে।’

‘তা সত্ত্বেও ৩ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয় আরিয়ানকে। রেকর্ড করা হয় তার স্টেটমেন্ট। তারপর আরিয়ান খানের কোনোরকম মেডিকেল টেস্ট করা হয়নি। মেডিকেল টেস্ট ছাড়া কীভাবে মাদক মামলা ফাইল করা সম্ভব! এর আগে অনেক পিটিশনে আমরা আবেদন করি, কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়। আরবাজের জুতা থেকে ছয় গ্রাম মাদক পাওয়া গেছে, তার জন্য আরিয়ানকে দায়ী করা সঠিক নয়।’

‘পাশাপাশি এফআইআর শিটে মোবাইল বাজেয়াপ্ত করার কোনো উল্লেখই নেই। অথচ আটক করার পরই মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে আরিয়ানের। মাদক নয়, শুধুমাত্র ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে আরিয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে এনসিবি।’

হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট প্রসঙ্গে মুকুল বলেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে কোথাও মাদক পার্টির উল্লেখ নেই। এমনকি মোবাইল চ্যাটের সঙ্গে মাদক পার্টির কোনো সম্পর্কও নেই। যে যে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের কথা বলা হচ্ছে, তা ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের। আমি কোনো এনসিবি অফিসারের বিরোধিতা করছি না। এমনকি তাদের সাক্ষী প্রভাকর সৈল বা কেপি গোসাভিকে নিয়েও চিন্তিত নই। এমনকি আমার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক নেতারও সম্পর্ক নেই। আরিয়ান মাদক পার্টিতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি কিছুই করেননি। অথচ তাকে গ্রেপ্তার করা হল।’

তিনি বলেন, ‘ওই পার্টিতে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তাদের থেকে প্রাপ্ত মাদক অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি তাদের একবছরের জেল হতে পারে। তাদের নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে কোনো মামলাই হতে পারে না। এনসিবিরি দাবি অনুযায়ী অচিত ও আরবাজের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও মাদক পার্টিতে অচিত উপস্থিতই ছিল না। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বাড়ি থেকে। অচিত ও আরিয়ান চ্যাটে শুধুমাত্র অনলাইন গেম নিয়ে আলোচনা করেছিল। এর থেকে বেশি কোনো বিষয়ে কথা বলেননি তারা।’

এদিন সুপ্রিম কোর্টের কেস রাগিনী দ্বিবেদী ভার্সেস স্টেট অফ কর্নাটকের উদাহরণ দিয়ে মুকুল রোহাতগি বলেন, ‘সেই কেসেও অভিযুক্তের থেকে কোনো মাদক পাওয়া যায়নি। আরিয়ানের মতোই শুধুমাত্র ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাকে। তাই সুপ্রিম কোর্ট তাকে জামিন দিয়েছিল। এছাড়া বোম্বে হাইকোর্টেরই একটি মামলার উদাহরণ দেন তিনি। শাহরুখ খানের ছেলে হওয়ার কারণেই এই মামলা নিয়ে উৎসাহিত সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মিডিয়া। রাজনৈতিক নেতা ও এনসিবি কর্তাদের সমস্যার প্রভাব আরিয়ানের মামলায় পড়া অনুচিত বলে দাবি করেন তার আইনজীবী। জামিনের আর্জি জানিয়ে এদিন বক্তব্য শেষ করেন মুকুল রোহাতগি।

গত ২ অক্টোবর মাদক পার্টি থেকে আটক করা হয়েছিল আরিয়ানকে। দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা জেরার পর পরদিন এনসিবি তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। দুই দফায় জামিন খারিজের পর এনসিবি হেফাজত থেকে গত ৮ অক্টোবর জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। তারপর থেকেই আর্থার রোড জেলে বন্দি আরিয়ান খান।

ঢাকাটাইমস/২৬অক্টোবর/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :