চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া, অবরুদ্ধ কয়েক পরিবার

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২১, ০৯:০৩ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১১:০৬

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এর ফলে নয় দিন ধরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা। বাইরে বেরোতে না পারায় কষ্টে দিন কাটছে এসব পরিবারের লোকজনের। গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকার এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী পাপুল ফকির ও তার লোকজন চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে। এ অবস্থায় কয়েকটি পরিবারের নারী-শিশুরা টানা নয় দিন ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। পুরুষরা বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। এতে পুরুষরা ভয়ে বাড়িতে প্রবেশ করতে না পেরে আত্মীয়স্বজনদের বাসায় অবস্থান করছে।

স্থানীয়রা জানান, জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের বিরোধ চলে আসছিল। কিছুদিন আগে পাপুল ফকির ও তার লোকজন ইয়াসির আরাফাতের পরিবারের সব লোকজনের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে তাদের বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিশ হলেও তা অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকা ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য শামসুননাহার বেগম জানান, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছি। আমাদের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। বাইরে বের হতে দিচ্ছে না। এমনকি বাজারও করতে পারছি না। মারপিটের ভয়ে পুরুষরা মানুষের বাড়িতে থাকছে। নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটছে আমাদের। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই।

বোনকে দেখতে এসে অবরুদ্ধ হয়ে পড়া শিউলী বেগম জানান, ‘আমার বোন অসুস্থ হওয়ায় তাকে দেখতে এসে আর বাড়ি যেতে পারছি না। রাস্তায় বেড়া দেওয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। ওষুধপত্র ও বাজার করার প্রয়োজন পড়লেও তারা বের হতে পারছেন না।’

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য সাদ্দাম হোসেন বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আমাদের বাড়িতে প্রবেশের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। এক সপ্তাহ পার হলেও এখন বাড়িতে ঢুকতে পারিনি। রাস্তায় পাপুল ফকির ও তার লোকজন আমাদের ধারাল অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে মারপিট করেছে। কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। থানায় মামলা হলেও এখন কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। ন্যায়বিচার চেয়ে পুলিশের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

ইয়াসির আরাফাত নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, নিজের বাড়ি থেকেও অন্যের বাড়িতে থাকছি। ঠিকমতো পরিবারের খোঁজ নিতে পারছি না। আমার মায়ের ডায়াবেটিস এক সপ্তাহ পার হলেও ওষুধ কিনে বাড়িতে পাঠাতে পারিনি। বাড়িতে ঢোকার জন্য এসেও আমি নিজেও মারপিটের স্বীকার হয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হলেও তারা তাতে কর্ণপাত না করে উল্টো আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোবাইলে পাপুল ফকির জানান, ‘তারা আমার জমি দখল করেছে। তাই শিক্ষা দেওয়ার জন্য তাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করেছি। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারবো না।’

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) আব্দুর রউফ বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা নেয়া হয়েছে। চলাচলের রাস্তা খুলে দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/প্রতিনিধি/এমআর