হাসপাতালটিতে প্যাথলজি পরীক্ষা কবে চালু হবে কেউ জানে না

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১০:৪০

শেখ ফেরদৌস রহমান, ঢাকাটাইমস

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র আধুনিক হাসপাতাল শহীদ শেখ আবুনাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল। তবে বর্তমানে হাসপাতালটির প্যাথলজি বিভাগের রোগীদের জরুরি প্যাথলজি পরীক্ষাগুলো বন্ধ রয়েছে। প্যাথলজি পরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় রি-এজেন্ট না থাকায় পরীক্ষাগুলো বন্ধ রেখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গত ১৪ অক্টেবর থেকে হাসপাতালটির প্যাথলজি বিভাগের ফোর টি, থ্রি টিএসএইচ, ট্রোপোনাইন, এইচবিএ ওয়ানসি, পিএস এএইচবিআইসি, সিরাম ক্রিরেটাইন পরীক্ষা বন্ধ। তাছাড়া চলতি সপ্তাহে কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বেশ কয়েকটি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে রি-এজেন্টের অভাবে।

আবুনাসের হাসপাতালে স্বল্প খরছে এই প্যাথলজি বিভাগে জরুরি মুহূর্তে রোগীরা পরীক্ষাগুলো করতে না পেরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এবং অতিরিক্ত অর্থ খরচ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে।

হাসপাতালটির প্যথলজি বিভাগের ইনচার্জ আরাফাত হোসেন বলেন, রি-এজেন্ট সংকট থাকার কারণে আমরা বেশ কয়েকটি প্যাথলজি পরীক্ষা বন্ধ রেখেছি। তাছাড়া এখন প্যাথলজি বিভাগের দামি দুটি মেশিন অটো বাইকোমিস্টারি বা অটো কল সেন্টার ও অটো বাইকোমিস্টারি এনালাইজার মেশিন রি-এজেন্টের অভাবে চালু করা হচ্ছে না। এতে মেশিন দুটি বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সেবা প্রত্যাশী রোগী আহমেদ গাজী বলেন, সরকারি হাসপাতালে প্যাথলজি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে, এটা প্রথম দেখলাম। ছোট ছেলে থাইরডের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসক আমাকে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করে আনতে বলেছেন। অথচ দেখছি হাসপাতালে প্যাথলজি পরীক্ষাগুলো বন্ধ। আমাদের এখন অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করে আনতে হচ্ছে।

আহমেদ গাজী বলেন, বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করতে গেলে দালালদের ক্ষপ্পরে পড়ছে রোগীরা। শহীদ শেখ আবুনাসের হাসপাতালে টি ফের টিএসএইচ পরীক্ষা করতে ৬০০ টাকা খরচ নিতো। আর বাইরে একই পরীক্ষা করতে আমাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১৮০০ টাকা। এর মানে সরকারি হাসপাতাল থেকে তিনগুণ বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে।

এছাড়া ট্রোপোনাইন পরীক্ষা করতে সরকারি হাসপাতালে ৫০০ টাকা বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১৫০০ টাকা, এইচবিএ ওয়ানটি ৩০০ টাকা। আর বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিচ্ছে ১০০০ টাকা। আমরা দ্রুত হাসপাতালটির প্যাথলজি পরীক্ষা চালু করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, যেকোন সময় এই আধুনিক সেবার ব্যবস্থা থমকে যেতে পারে। হাসপাতালটিতে জনবল সংকট, চিকিৎসক সংকট রয়ে গেছে। পাশাপাশি আগের পরিচালক ডা. মুন্সি রেজা সেকেন্দার হাসপাতালটির অনেক ক্ষতি করে চলে গেছেন। হাসপাতালের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ কেনা কাটা না করে সেই অর্থ আবার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। এ কারণে আউট সোর্সিং জলবল গেল তিন মাসেও বেতন পাচ্ছে না।

যদিওবা ঠিকাদার নিজের পকেট থেকে দুই মাসের বেতন দিয়েছেন। তাছাড়া জরুরি প্যাথলজি পরীক্ষার রি-এজেন্ট তিনি না কেনার কারণে হাসপাতালটিতে প্যাথলজি বিভাগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা এখনও থেকে গেছে, যে কারণে এখন রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এ বিষয়ে শহীদ শেখ আবুনাসের হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আব্দুস শাকুর বলেন, আমি কিছু দিন আগে যোগদান করেছি। কবে নাগাদ পুনারায় প্যাথলজি পরীক্ষা চালু হবে, তা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। মূলত হাসপাতালের আগের পরিচালক ডা. মুন্সি রেজা সেকেন্দার, তিনি এসব সমস্যা তৈরি করে চলে গেছেন। এ কারণে  হাসপাতালে বিভিন্ন সম্যসা তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া আমার সর্ব্বোচ্চ ক্ষমতা ছিল ১৫ লাখ টাকার রি-এজেন্ট কেনার। আমি সেই টাকা দিয়ে কিনেছি। তবে এত অল্প টাকার রি-এজেন্ট তো দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তাছাড়া নতুন করে দরপত্র আহ্বান করার জন্য ডিজি অফিসে অনুমোদন চেয়েছি। তবে এখনও কোনো অনুমোদন পাওয়া যায়নি। এ কারণে রি-এজেন্ট কিনতে পারছি না।

(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/কেএম)