সড়কের মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই সংস্কার

মাহফুজুর রহমান, কালীগঞ্জ (গাজীপুর)
 | প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১৫:৫৫

গাজীপুর কালীগঞ্জের তুমুলিয়া ক্রেডিট ইউনিয়নের সামনে থেকে বর্তুল বাজার পর্যন্ত সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছে। অথচ বেশ কিছু পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি সড়কের মাঝখানে রেখে দেওয়া হয়েছে। ফলে স্থানীয়রা এই সড়কে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন।

বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে বন্যা রক্ষা বাঁধের উপর নির্মিত সড়কটির সংস্কার ও বর্ধিত করার উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। সড়কের প্রস্থ বাড়িয়ে ১৮ ফিট করা হয়। ২০২০ সালের ২০ জুলাই স্থানীয় সাংসদ ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি সড়ক সংস্কার ও বর্ধিত করণ কাজ উদ্বোধন করেন। প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের কাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রবাল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে দেওয়া হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তুমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই রয়েছে বোয়ালী উচ্চ বিদ্যালয়। ওই স্কুল লাগোয়া বোয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও রয়েছে। এর কিছু দূর গেলে একই এলাকায় বোয়ালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ওই সড়কে রয়েছে সেন্ট মেরিস স্কুল অ্যান্ড কলেজ। আর এই সড়কে প্রায় ১০/১২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে, যেগুলো সড়কের উপরে দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয়দের প্রবল আপত্তির পরও সংস্কারের সময় খুঁটিগুলো সড়ক থেকে সরানো হয়নি।

সড়ক সংলগ্ন দক্ষিণ ভাদার্ত্তী গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, রাস্তা সংস্কারের সময় অনেকেই বৈদ্যুতিক খুঁটির ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল। কিন্তু কর্মকর্তারা এসব কথায় কর্ণপাত করেননি। ওই সড়ক দিয়ে কয়েকটি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এ সড়ক দিয়েই আসা যাওয়া করে। পাশাপাশি ভারি যানবাহনের চাপতো রয়েছেই। তাই দ্রুত সড়কের উপর থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর দাবি করেন তিনি।

বোয়ালী গ্রামের বাসিন্দা আশীষ পিটার গমেজ জানান, এই সড়কের পাশে বেশ কিছু কারখানা গড়ে উঠেছে। এ কারণে সেখানে ভারি যানবাহন চলাচল করে। আর এসব যানবাহনের কারণেই সড়কটি তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে অচল ছিল দীর্ঘদিন। বহু প্রতিক্ষার পর রাস্তা যদিও সংস্কার হলো, কিন্তু সমস্যা আবার বেড়েও গেল। রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সরানো হয়নি। এ কারণে শঙ্কা রয়েই গেল। যেকোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। আর এ থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই সড়কের উপর থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানো উচিত।

এ ব্যাপারে তুমলিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, আমি ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএমের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন এটা যদি কোনো ব্যক্তির জমির উপর দিয়ে যেতো তাহলে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া যেতো। যেহেতু এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাজ তাই এলজিইডিকে পল্লী বিদ্যুতের জিএম বরাবর একটি আবেদন করতে হবে। আর আবেদনের প্রেক্ষিতে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সরিয়ে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

তুমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু বকর মিয়া বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ওই সড়কের পাশের এক ইউপি সদস্য ইতোমধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছেন, তারা দ্রুত তা সরিয়ে নেবেন।

উপজেলা প্রকৌশলী বেলাল হোসেন সরকার বলেন, আমরা খুব দ্রুত পল্লী বিদ্যুতের জিএম বরাবর আবেদন পাঠাব। তারপর বাকি কাজ তাদের। আবেদনের পর কতদিন লাগবে তা তারা ভালো বলতে পারবেন।

পল্লী বিদ্যুৎ কালীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি। যেহেতু এটি একটি ভিন্ন দাপ্তরিক কাজ তাই মৌখিকভাবে কাজ করার সুযোগ নেই। সড়কটি এলজিইডির দায়িত্বে থাকায় আমরা সরাসরি কোনভাবেই হস্তক্ষেপ করতে পারি না।

প্রতিষ্ঠানটি যদি আমাদের জিএম বরাবর আবেদন করে তাহলে সেক্ষেত্রে আমরা দ্রুত খুঁটি সরানোর কাজ সম্পন্ন করতে পারি। আগেও উপজেলার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে এ সমস্যা হয়েছিল। আমরা তা সমাধান করে দিয়েছি।

(ঢাকাটাইমস/২৭অক্টোবর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :