চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জায়গাগুলো সংরক্ষণ করা হবে: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১৭:১৭

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর প্রিয় জায়গা ছিলো বীর চট্টলা। মুক্তিযুদ্ধে এই চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকেই এম এ হান্নান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জায়গাগুলো সংরক্ষণ করবো, যাতে ইতিহাস বিকৃত করতে না পারে।’

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের কাট্টলীতে ৩০ একর জমিতে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণস্থান পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক নৌপ্রতিমন্ত্রী শাহজাহান খান সঙ্গে ছিলেন। এসময় তাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জেলা প্রশাসক।

পরে জেলা প্রসাশনের উদ্যোগে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সভায় মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এই চট্টগ্রাম থেকেই এম এ হান্নান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন৷ এমএ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরীসহ অনেক বড় নেতা চট্টগ্রামের। তাই প্রধানমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দেন চট্টগ্রামকে।

আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘কাট্টলী এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত স্থান প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব কিছুদিন আগে পরিদর্শন করে গেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। আমাকেও বিস্তারিত জানিয়েছেন। একটি সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি নির্মাণে সম্মতি দিয়েছেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণের প্রস্তাবিত এই জায়গাটি আমি দেখলাম। এটি খুবই চমৎকার জায়গা। এত চমৎকার জায়গা দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জায়গাগুলো সংরক্ষণ করবো, যাতে তারা ইতিহাস বিকৃত করতে না পারে।’

‘বে টার্নিমানাল ও রিং রোডের আট লেনের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে গেলে এলাকাটি স্বর্ণের খনিতে পরিণত হবে। আমি আশা করবো স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণের এই প্রকল্প হয়ে গেলে স্ট্যাচু অব লিবার্টির মতো বঙ্গবন্ধুর আদলে বিশাল আকৃতির একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হোক, যা সারাবিশ্বে আমাদের ইতিহাসের অংশ হয়ে যাবে।’

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, ‘আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যা করার দরকার প্রধানমন্ত্রী তা-ই করে দিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অতন্দ্র প্রহরী। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু এখনও পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা ধর্মের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কুরআন রেখে তারা দেশে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’

‘উগ্র-সাম্প্রদায়িকতাকে রুখতে হবে। জাতির প্রয়োজনে আবারও আমরা রাস্তায় নামবো। স্বাধীনতাবিরোধীদের কঠোর হস্তে দমন করবো।’ বলেন সাবেক এই মন্ত্রী।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম ইদ্রিস সিদ্দিকী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ।

পরিদর্শন শেষে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিস্তারিত বর্ণনা দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান। তিনি বলেন, ‘জায়গাটি উত্তর কাট্টলী মৌজা। চারটি অবৈধ ইটভাটা ছিল এখানে। জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ করার পর আবারও দখল করে তারা। এরপর আমরা পুনরায় সমূলে উচ্ছেদ করি। মুখ্য সচিব মহোদয় এই এলাকা পরিদর্শন করেছে। পরে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানান। এতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি জানিয়েছেন।’

নাজমুল আহসান বলেন, ‘৩০ একর সরকারি খতিয়ানভুক্ত জায়গা এটি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি শ্মশান রয়েছে এখানে। সেটি আমরা ঠিক রাখবো। এর কোনো ক্ষতি হবে না। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের পর এটি হবে দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্মৃতিসৌধ।’

(ঢাকাটাইমস/২৮অক্টোবর/কেএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :