এমপিদের ‘অনির্বাচিত’ বলে তোপের মুখে বিএনপির হারুন

প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০২১, ২০:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় এমপিদের ‘অনির্বাচিত সংসদ সদস্য’ মন্তব্য করে তোপের মুখে পড়েছেন বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ। পরে স্পিকারের অনুরোধে বক্তব্য প্রত্যাহার করে সংসদ থেকে ওয়াকআউট করেন আলোচিত এই সাংসদ।

রবিবার বিকালে একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের শুরুর দিনে জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যের পর হারুনুর রশীদ বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘যেসব এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ ভোট হচ্ছে সেসব এলাকা আতঙ্কের এলাকায় পরিণত হয়েছে।’ এ পর্যায়ে সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দিয়ে ‘এই সংসদে অনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা রয়েছেন’ বলে মন্তব্য করেন। এর সঙ্গে সঙ্গে সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা সংসদে মাইক ছাড়াই এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে থাকেন। চিৎকারে হারুন বক্তব্য দিতে পারছিলেন না। এ সময় তিনি তার কথাগুলো সম্পন্ন করার সুযোগ দিতে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি প্রত্যাহার করতে বলেছেন। আমি আগে উত্থাপন করি। আপনি যদি আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারেন তাহলে অবশ্যই প্রত্যাহার করব।’ পরে সবার প্রতিবাদের মুখে হারুন স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘এই সংসদে অনির্বাচিত সংসদ সদস্য রয়েছেন বলে আমার যে বক্তব্য আপনি প্রত্যাহার করার অনুরোধ করছেন, আমি তা প্রত্যাহার করছি।’

পরে তিনি স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি সংসদের অভিভাবক। আমি আপনার কাছে ব্যাখ্যা চাই। ইতিমধ্যে দুই ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তৃতীয় ধাপ ও চতুর্থ ধাপের তফসিল হয়েছে। তিন শতাধিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং গোটা পরিষদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাদের নির্বাচিত বলা হচ্ছে, তারা কাদের দ্বারা ইলেক্টেড (নির্বাচিত)? এই বিষয় আপনার কাছে ব্যাখ্যা চাচ্ছি। আপনি আমাকে (বক্তব্য) প্রত্যাহার করতে বলছেন- (কিন্তু আমি জানতে চাই) তারা কাদের দ্বারা নির্বাচিত? এই বিষয়টি এখানে পরিষ্কার করবেন। সংবিধান যেখানে বলছে, প্রশাসনের সব পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।’

বিএনপি নেতা হারুন বলেন, ‘সম্প্রতি ফ্রান্স ও ইরানে ভোট হয়েছে। সেখানে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার পরও আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ৫০ শতাংশ ভোট পাননি বলে পুনরায় ভোট হয়েছে।’

সাংসদ হারুন বলেন, ‘কোনো কাজের জন্য যখন টেন্ডার হয় সেখানে একজন অংশগ্রহণকারী থাকলে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করা হয়। তাহলে যেসব জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাদের নির্বাচিত করা হচ্ছে, সেসব জায়গায় কেন পুনঃতফসিল করা হচ্ছে না?’

একটি বড় রকমের সংকট তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আজ নির্বাচনে বিরোধী দল অংশগ্রহণ করছে না। যে কারণে সরকারি দল ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থীরা সারা দেশে হানাহানি-খুনোখুনিতে লিপ্ত হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনে এটা একটু ঝগড়াঝাঁটি’। ৪০ জনের বেশি প্রাণ হারিয়েছে। এরপরও আমরা এটাকে ঝগড়াঝাঁটি বলব? স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আমরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছি? কেন আপনারা কথাটা প্রত্যাহার করতে বলছেন, কেন বলছেন? যুক্তিসঙ্গত সাংবিধানিক এই জায়গাটি পয়েন্ট অব অর্ডার আকারে আমি উত্থাপন করতে চেয়েছি। কিন্তু আমাকে প্রত্যাহার করতে বলায় সংসদ থেকে ওয়াকআউট করছি।’ এরপর হারুন সংসদ কক্ষ ত্যাগ করে চলে যান।

(ঢাকাটাইমস/১৪নভেম্বর/কেআর/জেবি)