বাড়ি ফিরলেন চমেকে ছাত্রলীগের হামলার শিকার আকিব
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা কুমিল্লার ছেলে আকিব ১৯ দিন পর আবার কুমিল্লায় ফিরেছে। এখন মায়ের সঙ্গে আকিব। বাড়িজুড়ে এখন আনন্দের জোয়ার। একের পর এক আত্মীয় স্বজনরা আসছেন আকিবকে দেখতে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয় মেধাবী শিক্ষার্থী মো. মাহাদী আকিব।
দীর্ঘ ১৯ দিন চিকিৎসার পর বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় অ্যাম্বুলেন্সে করে কুমিল্লা নগরীর বাদুড়তলায় নিজ বাসায় নিয়ে আসা হয় আকিবকে। চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত পুরো রাস্তায় বাবা গোলাম ফারুক মজুমদার আকিবের পাশে ছিলেন।
বাসায় পৌঁছা মাত্রই ঘর থেকে দৌড়ে এসে মা নার্গিস আক্তার ছেলেকে জড়িযে ধরেন। এ যেন পরম পাওয়া। মুহূর্তেই কপালে মুখে ও হাতে এঁকেদেন প্রশান্তির চুমু।
আকিবের মা নার্গিস আক্তার বলেন, আজ কত দিন পর ছেলেকে নিজের হাতে ভাত খেতে দিয়েছি। আল্লায় আমার ছেলেরে আমার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি আল্লাহর কাছে হাজার কোটি শুকরিয়া জানাই।
আকিবদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কিং বামিশা গ্রামে। আকিবের বাবা গোলাম ফারুক মজুমদার কুমিল্লা জিলা স্কুলের শিক্ষক। আকিব সেই স্কুল থেকে ২০০৭ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি শেষ করে ঢাকার নটরডেম কলেজে ভর্তি হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েও ডাক্তার হবার ইচ্ছে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়।
তার বড় ভাই সাকিবও মেধাবী শিক্ষার্থী। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে।
শুক্রবার সকালে আকিবের বাবা গোলাম ফারুক মজুমদার জানান, আকিব ভালো আছে। সে সবাইকে চিনতে পারছে। চিকিৎসকের পরামর্শে আকিবকে এখন বাসায় রেখে চিকিৎসা দেয়া হবে। মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা দেশবাসীর কাছে আকিবের জন্য দোয়া চাই।
গত ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয় আকিব। তার মাথায় প্রচন্ড আঘাত হয়। এরপর থেকে আকিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এ সময় হাসপাতালের বেডে থাকা আকিবের মাথার খুলি সাদা ব্যান্ডেজে করে পেচিয়ে রাখা হয়। যেখানে চিকিৎসকরা লিখেছিলেন চাপ দিবেন না, হাড় নেই। এই লেখাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরালের পর দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
(ঢাকাটাইমস/১৯নভেম্বর/কেএম)