তাড়াশে ব্যস্ততা বেড়েছে কুমড়ো বড়ি তৈরির কারিগরদের

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১৪:১৪ | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১৪:৫৯

শায়লা পারভীন, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)

শীত আসতেই সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় ব্যস্ততা বেড়েছে কুমড়ো বড়ি তৈরির কারিগরদের। কারণ শীতের মৌসুমে কুমড়ো বড়ির কদরটা একটু বেশিই। এ অঞ্চলের সুস্বাদু কুমড়ো বড়ির চাহিদা রয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

তাই প্রতি বছরের মতো উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এর কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।

কুমড়ো বড়ি ব্যবসায়ীরা মনে করেন, আগাম কুমড়ো বড়ি তৈরির পর বিক্রি করলে তা লাভজনক ও বেশি দাম পাওয়া যাবে। 

সরজমিনে উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামে দেখা গেছে, সারি সারি কুমড়ো বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য রোদে দিয়েছেন।  এ কাজে নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও সাহায্য করছেন।

কুমড়ো বড়ি ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, হাট-বাজারে কুমড়ো বড়ি বর্তমানে খুচরা ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে তারা আশা করছেন আর কয়েকদিন পর আরও দাম বাড়বে।

তাড়াশ উপজেলার কুমড়ো বড়ির কারিগর তোফাজ্জল হোসেন জানান, অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় এ অঞ্চলের কুমড়ো বড়ি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। বিশেষ করে ঢাকায় চাহিদা রয়েছে বেশি।

তিনি আর জানান, এটি সারা বছর তৈরি করা সম্ভব কিন্তু এটা শীতকালে বেশি তৈরি হয়। কারণ এটা শীতের সময় রান্না করে খেতে বেশি মজা লাগে।

জানা গেছে, গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষের অনেকের ভাগ্য উন্নয়নে শ্রম দিয়ে অনেক বছর ধরে এ কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজে নিয়োজিত রয়েছে তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামের প্রায় ৩০-৪০টি পরিবার।

কুমড়ো বড়ির কারিগর উপজেলার নওগাঁ গ্রামের ভাংশিং পাড়ার আব্দুল হামিদ জানান, আগে কুমড়া বড়ি ব্যবসায়ী পরিবারগুলো প্রথম অবস্থায় তেমন সচ্ছল ছিল না। এখন তারা অনেকটাই সচ্ছল  এই ব্যবসা করে।

তাছাড়া বড়ি তৈরির জন্য আগে সনাতন পদ্ধতিতে সন্ধ্যায় ডাল ভিজিয়ে রাখতেন এবং পরের দিন কুমড়ো বড়ি তৈরির জন্য ডাল, রং, তেল, টিন ও শীলপাট বেটে বড়ি তৈরি করতেন। কিন্তু বর্তমানে তাদের কষ্ট করতে হয় না। কারণ মেশিনের মাধ্যমে কুমড়ো বড়ি তৈরির ডাল ফিনিশিং করা যায়।

নওগাঁ গ্রামের কুমড়ো বড়ি তৈরির কারিগর সোনাভান খাতুন জানান, কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে তাদের প্রচুর পরিশ্রম করতে হতো। কিন্তু এখন অতোটা পরিশ্রম করতে হয় না। কারণ এখন মেশিনের মাধ্যমে ডাল ফিনিশ করা হয়। শুধু হাতে মাধ্যমে দিতে হয় বড়িটি।

এ ছাড়া বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়ায় অটোমেশিনের দ্বারা ডাল ও চাল ভাঙ্গানো হয়। তাই পরিশ্রম এখন কম।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, এ অঞ্চলের কুমড়ো বড়ির কদর রয়েছে দেশে বিভিন্ন এলাকায়। পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাই বেশি কাজ করেন।

(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/এসএ)