শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি, ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১৫:৪৪ | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১৬:৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নটরডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় ট্রাফিক আইন কঠোরসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসব দাবি আদায়ে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন।নটরডেম কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। এছাড়াও তেজগাঁও, উত্তরাসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা তিনটার দিকে আলটিমেটাম দিয়ে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছাড়েন।

শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-

১. যথাযথ তদন্ত করে নাঈমের ‘হত্যাকারীদের’ সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান।

২. জেলা শহরের বিভিন্ন রুটে শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু।

৩. স্কুল-কলেজের সামনে হর্ন ও ওভারস্পিডের জন্য স্টুডেন্টদের কাছে জরিমানা এবং প্রশাসনের কাছে হস্তান্তরের অধিকার প্রদান।

৪. সব ছাত্রের জন্য হাফ পাস নিশ্চিতকরণ।

৫. প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে একাধিক স্পিড ব্রেকার নির্মাণ।

৬. শহরের প্রতিটি অচল ট্রাফিক লাইটের সংস্কার এবং সঠিক ব্যবহার করা।

৭. ট্রাফিক আইনের সঠিক প্রয়োগ।

৮. জেব্রা ক্রসিংয়ের পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ।

৯. চলন্ত বাসে যাত্রী ওঠানামা করালে প্রত্যেক বাসকে আইনের আওতায় আনা।

১০. নিরাপদ সড়ক আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে নানা ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন। তারা বলেন, 'আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে', 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস', ‘লেখাপড়া করে যে, গাড়ি চাপায় মরে সে’, ‘আর কতজন মরলে টনক নড়বে’, ‘আর কতবার ভাসতে হবে রক্ত গঙ্গায়’, ‘বছর কুড়ির হিসাব মেলানো বাকি’ ইত্যাদি।

ফার্মগেটে আন্দোলন করেন তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে এক শিক্ষার্থী ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে সড়কে গাড়িচাপায় অনেক শিক্ষার্থী মারা গেছে। এরপরে কিছু কিছু ছোট ছোট সমাধান দেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমরা কোনো স্থায়ী সমাধান পাইনি। এই ২১ সালে এসে কালকে যখন নটরডেমের ভাইটা মারা গেল এটার দায় কে নেবে। এই যে তার বাবার বুকভরা কান্না এটার দায় কে নেবে। এটার কি কোনো স্থায়ী স্থায়ী সমাধান নেই। কারো কাছে কি নেই।’

এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি কীভাবে একটা ছাত্রের উপর দিয়ে চলে যায়? সে যখন রাস্তায় পড়ে গেল তখন সে হাত বাড়িয়েছে, কিন্তু গাড়ির চালক তার কোনো কথা শোনেনি। আশেপাশের মানুষ চালককে বলেছে, ভাই একটু রাখেন, একটা ছেলে নিচে পড়েছে, এরপরেও কীভাবে তার উপর দিয়ে চলে যায়। এর কি কোনো প্রতিবাদ হবে না।’

গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানে সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ির ধাক্কায় নটরডেম কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান (১৭) নিহত হন। এর প্রতিবাদে বুধবার বিকাল তিনটা থেকে মতিঝিলের শাপলা চত্বর ও এর আশপাশের সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস নাঈমের বাবা-মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন।

এদিকে শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় গাড়িচালকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহতের বাবা শাহ আলম। চালক নাম রাসেল খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ তাকে আদালতে তুলে রিমান্ড চাওয়ার কথা রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫নভেম্বর/কেআর/জেবি)