কাটাখালির পৌর মেয়র যে কোনো সময় গ্রেপ্তার

রাজশাহী প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬:৩১

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে তাচ্ছিল্য করে কথা বলা একটি অডিও ভাইরাল হওয়ার পর তুমুল সমালোচিত হন কাটাখালি পৌর মেয়র আব্বাস আলী। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে তার অডিও রেকর্ডসহ একটি প্রতিবেদন প্রচার হয়। এরপর থেকেই তিনি তোপের মুখে পড়েন। তার বিচার দাবিতে সরব হয়ে উঠে বিভিন্ন মহল।

এই ঘটনার পর থেকে মেয়র আব্বাস লোকচক্ষুর অন্তরালে রয়েছেন। তবে যেকোনো মুহূর্তে গ্রেপ্তার হতে পারেন মেয়র আব্বাস। পৌর মেয়র আব্বাসের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে ১২ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন জেলা প্রশাসনের হাতে। করেছেন সংবাদ সম্মেলনও।

তবে যে কোন সময় রাসিক কাউন্সিলর মোমিনের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হতে পারেন মেয়র আব্বাস।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ। তিনি বলেন, ‘মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার তদন্ত চলছে। অডিও ক্লিপটির সত্যতা যাচাইয়ে একজন এক্সপাটিজের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া শুক্রবার মেয়র আব্বাস নিজেই লাইভে এসে ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে তা প্রমাণিত করেছেন। এতে প্রমাণিত হয়েছে তিনি দোষী।’

তিনি বলেন, তার গ্রেপ্তারের জন্য দুটো আলামতই যথেষ্ট। একটা হচ্ছে- অডিও ক্লিপ ও দ্বিতীয়টি তার ফেসবুকে এসে মাফ চাওয়া। এই দুটো জিনিসই যথেষ্ট। বর্তমানে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। তার অবস্থান খোঁজার জন্য আমাদের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তা নিচ্ছি। আশা করছি, যে কোনো মুহূর্তে মেয়র আব্বাসকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।’

মেয়র আব্বাসকে গ্রেপ্তারের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোনো অনুমতিপত্রের প্রয়োজন আছে কিনা, জানতে চাইলে ওসি নিবারণ বলেন, ‘যদি সন্ত্রাস দমন আইনের মামলা হতো তবে স্থানীয় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে তাকে গ্রেপ্তার করতে হতো। কিন্তু তার অপরাধ যেটি, সেটি হচ্ছে সিআরপিসি জাতীয় মামলা।’

তিনি বলেন, ‘এ মামলায় ‘সেনশন অর্ডার বা পূর্বানুমতির’ প্রয়োজন নেই। তারপরও পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চিঠি জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া হয়েছে। তবে সেটির বাধ্যবাধকতা নেই, শুধুমাত্র জানিয়ে রাখা আর কি।’

মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে অনাস্থাপত্রের বিষয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ‘পৌর কাউন্সিলরদের প্রদান করা অনাস্থাপত্র ও পৌর রেজুলেশনের কাগজাদি আমি গ্রহণ করেছি। এখন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আইন অনুযায়ী বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে। এরপর তার একটি প্রতিবেদন ঢাকায় প্রেরণ করা হবে।’

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘গত কয়েক দিন পূর্বে আমার কাছে মেয়র আব্বাসের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার কাগজটিও হাতে এসেছে। সেটির একটি পজিটিভ প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি। এখন মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তী নির্দেশনা আশার পর সে অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আশা করছি, পজিটিভ রেজাল্ট আসবে।’

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা জানান, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি কোনভাবেই মেনে নেয়া সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সবার সম্মতিক্রমে তাকে দল থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দিয়ে কেন্দ্রে চিঠি দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার হতে পারেন। তবে এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি আসার অপেক্ষা রয়েছে মাত্র।’

এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মেয়র আব্বাসের জেলা সদস্য পদ আজীবনের জন্য বাতিলের সুপারিশ করে কেন্দ্রে জানানো হয়েছে। শনিবার সকালে সেই চিঠি ডাকযোগে কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন নেতারা।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :