১৮ মাস পর পানিমুক্ত প্রতাপনগরের চার গ্রাম

প্রকাশ | ২৭ নভেম্বর ২০২১, ২১:৩০ | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১, ২১:৪০

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও ইয়াস বিধ্বস্ত সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরের বন্যতলা এলাকার খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধটি দীর্ঘ ১৮ মাস পর অবশেষে মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। ফলে দীর্ঘদিন পরে হলেও পানিবন্দি থেকে মুক্তি পেলো ক্ষতিগ্রস্ত প্রতাপনগর ইউনিয়নের চারটি গ্রামে। এতে বন্ধ হলো ওই ইউনিয়নের চারটি গ্রামের লোকালয়ে নদীর লবণাক্ত পানি প্রবেশ। শনিবার দুপুরে ভেঙে যাওয়া বাঁধের স্থানটি মেরামত করা সম্ভব হয়।

বাঁধটি মেরামত করা গেছে এই খবরে বন্যতলা এলাকায় ছুটে যান শত শত মানুষ। মেরামতে স্বেচ্ছাশ্রমে তারাও সহযোগিতা করেছেন অনেকেই। আনন্দে আত্মহারা দীর্ঘ ১৮ মাস পানিবন্দি থাকা উপকূলীয় ৬ হাজার বাসিন্দা।

প্রতানগর গ্রামের বাসিন্দা সাঈদুর রহমান জানান, ইয়াসের প্রভাবের জলোচ্ছ্বাসে নদীর বাঁধটি ভেঙে যায়। সেই থেকে দীর্ঘ ১৮ মাস পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছি। মানুষের কত দুঃখ-কষ্ট সেটি ভাষায় প্রকাশ অসম্ভব। গ্রামের মধ্য দিয়েই নদীর জোয়ারের লবণাক্ত পানি উঠানামা করেছে। গ্রামের মধ্যে অনেকস্থান নদীর সংযোগ খালে পরিণত হয়েছে। ভেঙে গেছে বহু মানুষের ঘরবাড়ি, ভেসে গেছে মাছের ঘের কৃষি জমি।

তিনি বলেন, অবশেষে বন্যতলা এলাকার সেই বাঁধটি ১৮ মাস পর রক্ষা করা গেছে। আজ থেকে নদীর পানি গ্রামে প্রবেশ বন্ধ হলো। আনন্দে আত্মহারা হয়েছে মানুষ। তবে আবারও দুর্যোগ আসলে বাঁধ ভেঙে মানুষ আবারও দুর্ভোগে পড়বে। আর এ জন্য তারা টেকসই বাঁধ নির্মাণ চান যাতে তারা ভবিষ্যতে নিরাপদে বসবাস করতে পারেন।

ওই এলাকার মাসুম বিল্লাহ জানান, বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে প্রতানগর ইউনিয়নের প্রতাপনগর, কুড়িকাওনিয়া, মাদারবাড়িয়া ও পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বন্যতলা এই চারটি গ্রামের প্রায় ৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। অবশেষে শনিবার থেকে পানিমুক্ত হলো এ চারটি গ্রাম। এখন আর নদীর জোয়ারের পানি গ্রামে ঢুকছে না। ভেঙে যাওয়া বাঁধের স্থানটি জিও ব্যাগ দিয়ে আটকানো হয়েছে।

দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বন্যতলা এলাকার বাঁধটি সংস্কার কার্যক্রম চলেছে। ফেনী জেলার সালেহ আহম্মেদ নামে এক ঠিকাদার বাঁধ মেরামত কাজটি বাস্তবায়ন করছেন। প্রকল্পের ব্যয় ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। তবে এটি আরও বাড়বে বলে জানা গেছে।

দাতা সংস্থা জাইকার বন্যতলা বেড়িবাঁধ সংস্কার প্রকল্পের কনসালটেন্ট আব্দুল মালেক জানান, বন্যতলা এলাকায় ৩০০ ফিটের মত বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। শনিবার থেকে আর লোকালয়ে পানি প্রবেশ করবে না, মূল ভাঙন পয়েন্টটি আটকে দেওয়া হয়েছে। বাঁধ মেরামত কাজটি এখনো শেষ হয়নি, চলমান রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৭নভেম্বর/এলএ)