রাজাকার আখ্যা দিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদ

‘প্রতিবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এলেই আমাকে রাজাকার, পিস কমিটির সদস্য, স্বাধীনতাকামী মানুষের হত্যাকারী বানানো হয়। নির্বাচনে সম্মানহানির জন্য প্রতিপক্ষরা এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে থাকেন।’

শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও গৌরীঘোনা ইউনিয়নের বারবার নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান এসএম সিদ্দিকুর রহমান কেশবপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও উপজেলাব্যাপী আওয়ামী লীগ নেতারা দলীয় মনোনয়ন পেতে গ্রুপিং লবিংসহ এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি গৌরীঘোনা ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থনে ইতোপূর্বে চারবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমান আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্বে রয়েছি। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গৌরীঘোনা ইউনিয়ন থেকে আমার ছেলে মাসুদুর রহমান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে গ্রামাঞ্চলে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দোয়া ও আশীর্বাদ চেয়ে ব্যাপক গণসংযোগ করছে। ছেলের এ জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে গত ২২ নভেম্বর গৌরীঘোনা গ্রামের মৃত ইউসুপ শেখের ছেলে শেখ সিদ্দিকুর রহমান পরিকল্পিতভাবে আমাকে শান্তি কমিটির ইউনিয়নের সহসেক্রেটারি, রাজাকার এমনকি স্বাধীনতাকামী মানুষের হত্যাকারী আখ্যায়িত করে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারা আমার ও সন্তানদের সম্মানহানিসহ জনপ্রিয়তায় ধস নামানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এতে ভোটাররা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

গত ২০১০ সালের ৯ নভেম্বর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী স্বাক্ষরিত প্রকাশিত তালিকায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় গৌরীঘোনা ইউনিয়নের দশকাহুনিয়া গ্রামের মৃত শেখ এরশাদ আলী ও সন্ন্যাসগাছা গ্রামের মৃত হায়দার আলীর নাম রয়েছে। এছাড়া, আমি যে পিস কমিটির সদস্য ছিলাম না তা নিশ্চিত করে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী প্রত্যয়নপত্র দেন। ২০১৬ সালের ৩ মার্চ অনুরূপ প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন সাবেক কমান্ডার মো. আনিছুর রহমান খান। তার প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ রয়েছে, গৌরীঘোনা গ্রামের মৃত ইউসুপ শেখের ছেলে শেখ সিদ্দিকুর রহমান পিস কমিটির সদস্য ছিলেন। প্রতিবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এলেই আমাকে রাজাকার, স্বাধীনতাকামী মানুষের হত্যাকারী বানানো হয়। তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে শেখ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এসএম সিদ্দিকুর রহমানের নামের সাথে আমার নামের মিল থাকায় তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তার নামের স্থানে আমার নাম বসিয়ে এলাকায় অপপ্রচার চালানো অব্যাহত রেখেছেন। এতে আমার মানসম্মান ক্ষুন্ণ হচ্ছে। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ১৪/১৫ বছর। এসএম সিদ্দিকুর রহমান নিজের দোষ আমার ওপর চাপিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে হেয় করে চলেছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম রুহুল আমীন বলেন, ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান এসএম সিদ্দিকুর রহমান পিস কমিটির সাথে জড়িত ছিলেন এমন ধরনের কোন প্রত্যয়নপত্র আমরা কখনও শেখ সিদ্দিকুর রহমানকে দেইনি। যদি সে এ ধরনের প্রত্যয়নপত্র ব্যবহার করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত ছিলেন- গৌরিঘোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল হোসেন মোল্লা ও রেজাউল করিম গোলদার, ওয়ার্ড কৃষকলীগের সভাপতি আবুল হোসেন সরদার, আওয়ামী লীগ নেতাল মাসুদুর রহমান, মনোয়ার রহমান প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৮নভেম্বর/এলএ)