নরসিংদীতে ব্যালটবাক্স ছিনতাইকালে গুলি, নিহত ২

নাজমুল হাসান (নরসিংদী প্রতিনিধি), ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ০৮:০২ | প্রকাশিত : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ০২:০৬

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় দুইটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ব্যালটবাক্স ছিনতাই ঠেকানো নিয়ে পুলিশ ও প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৫ থেকে ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলার চান্দেরকান্দি ও বাখরনগর ইয়নিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষে রবিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

চান্দেরকান্দিতে নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিতে নিহত ব্যক্তির নাম আরিফ মিয়া (২৪)। আর বাখরনগরে ইউপিতে নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিতে নিহত হন ফরিদ মিয়া (৩২)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দেরকান্দি ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন খোরশেদ আলম। আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন মেছবাহ উদ্দিন খন্দকার মিতুল। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চান্দেরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গণনার সময় হঠাৎ দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় ব্যালটবাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশের ওপরও পাল্টা গুলি ছোড়া হয়। এরপরই রক্তাক্ত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ আরিফ মিয়াকে উদ্ধার করা হয়।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় ২ পুলিশ সদস্যসহ ১২ জনকে আহত অবস্থায় ওই হাসপাতালে আনা হয়। জরুরি বিভাগে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সংঘর্ষে ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে সাত আটজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গুলিবিদ্ধদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পুলিশ জানায়, আরিফ মিয়া নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের জানখারটেক এলাকার চান মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় সিএনজিচালক। শিবপুরের সিএনজিচালক হয়েও কী কারণে তিনি রায়পুরার চান্দেরকান্দি ইউনিয়নের ওই কেন্দ্রে অবস্থান করছিলেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

অপরদিকে, উত্তর বাখরনগর ইউপিতেও একইরকম ঘটনা ঘটেছে। এই ইউপির ৫ নং ওয়ার্ডে সদস্য পদে ভোট গণনা নিয়ে রবিবার সন্ধ্যার দিকে দুই প্রার্থীর কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পক্ষের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে ব্যালটবাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এরপরই রক্তাক্ত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ ফরিদ মিয়াকে উদ্ধার করা হয়।

রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ফরিদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। অ্যাম্বুলেন্সচালক জহির মিয়া তাকে মুঠোফোনে ফরিদের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছে। তার ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ছয় সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে স্থানীয়দের দাবি।

তবে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলছেন, তিনি একজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়েছেন। গুলিতে কারও মৃত্যু হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত তথ্য জানেন না।

এ কর্মকর্তা বলেন, 'কেন্দ্র থেকে ব্যালটবাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার সময় একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তার মৃত্যুর ব্যাপারে পুলিশ এখনো নিশ্চিত নয়। এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করছে পুলিশ।'

(ঢাকাটাইমস/২৯ নভেম্বর/এলএ/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :