শীতে কম পানি পানের কুফল জানুন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ১০:১৩

পানির অপর নাম জীবন । সুস্থ ও রোগ প্রতিরোধ করার জন্য মানুষের শরীরে প্রতিদিন পানির প্রয়োজন রয়েছে। পানি ছাড়া আমাদের জীবন ধারণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আমাদের শরীরের ৩ ভাগের ২ ভাগই পানি। পানি টিস্যুতে অক্সিজেন এবং নিউট্রিয়েন্ট সরবরাহ করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

শীতকালে বাড়তি পানির চাহিদা কিছুটা স্বাভাবিক নিয়মেই কমে যায়। শীতে তাপমাত্রা কম থাকার কারণে ত্বকের পাশাপাশি শরীরও খুব তাড়াতাড়ি শুষ্ক হয়ে যায়। এজন্য শীতকালে অনেকেরই পানি কম পান করার প্রবণতা দেখা যায়। গরমকালে তেষ্টা বেশি পায় ফলে পানি পান করা হয়। কিন্তু শীতকালে সেই সম্ভাবনা থাকে না। শরীরে পানির ঘাটতি ডেকে আনতে পারে নানা রোগ। হতে পারে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা।

শীতের সময় ঠান্ডার ভয়ে পানি পান করা কমালে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে ঠান্ডা পানি খেতে অসুবিধা হলে শীতের সকালে চায়ের আগে গরম পানি খেয়ে দিন শুরু করুন।

সাধারণত বেশি বয়সে অনেককেই প্রেশার, সুগার, কোলেস্টেরলসহ নানান ধরনের ওষুধ খেতে হয়। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান না করলে শরীরে নানান ক্ষতিকর পদার্থ জমা হতে শুরু করে।

আবার উচ্চরক্তচাপ, কিডনির অসুখ, লিভারের অসুখ, হার্ট ফেলিওর ইত্যাদি কারণে অনেকের হাত, পা বা পেটে তরল জমে গিয়ে ফুলে যায় বা অল্প পরিশ্রমে শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হয়। তাদের শরীরের বাড়তি জলীয় অংশ বের করে দেওয়ার জন্য ল্যাসিক্স জাতীয় ওষুধ খেতে হতে পারে। যারা এই ওষুধ খান, তাদের শরীরে পানির চাহিদা তুলনামূলক বেশি থাকে।

প্রতিদিনের শরীরে প্রয়োজনীয় পানির কুড়ি শতাংশ পূরণ হয় খাবারের জলীয় অংশ থেকে আর বাকিটা চা, কফি, দুধ, বোতলজাত ঠান্ডা পানীয়, ফল বা ফলের রস বা হার্ড ড্রিংকসের মতো জলীয় খাবার থেকে আসে। এছাড়া তরমুজ বা পালং শাকের মতো খাবারে নব্বই শতাংশের বেশি পানি থাকে, এরা পুষ্টির সঙ্গে শরীরের পানির চাহিদাও মেটায়।

যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তা বাড়তে পারে পানি কম খেলে। পানি কম খেলে শরীরে পানির ঘাটতি বা ডিহাইড্রেশন হয়।

শরীরে টক্সিন জাতীয় সব পদার্থই মূত্রের মাধ্যমেই নির্গমন হয়। পানি কম খেলে মূত্র নির্গমনের পরিমাণ কমে যায়। শরীরে টক্সিনের মাত্রা বেড়ে গেলে জ্বালা অনুভব হতে পারে। যা থেকে ইনফেকশনের আশঙ্কাও থাকে। পানি কম খেলে এই সমস্যা আরও বাড়তে পারে।

শরীরে পানির ঘাটতি হলে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে পারে। যা থেকে মাথা, ঘাড়ে এবং চোখের ব্যথাও বাড়তে পারে।

একটানা কাজের মাঝেও পানি পান করা উচিত। শীতকালে শরীরে পানির ঘাটতি হলে ক্লান্ত লাগে।

শীতকালে শুষ্কতার জেরে চুল, ত্বকও শুষ্ক হয়। খুশকি বাড়ে। পরিমিত পানি পান করলে এই সমস্যা দূর হয়।

শীতকালে একাধিক অনুষ্ঠান-উৎসব থাকে। খাওয়া দাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি পানও জরুরি। তাতে হজম শক্তি বাড়ে।

পানিকে অনেকে ওষুধের সঙ্গেও তুলনা করেন, কেন না শরীরে জমে থাকা নানান টক্সিক প্রস্রাব ও ঘামের মাধ্যমে শরীরের বাইরে বেরিয়ে গিয়ে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। তাই শীতের দিনেও ন্যূনতম ১.২–১.৫ লিটার পানি পান করা দরকার।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের সময়ে পিপাসা না পেলেও নিয়ম করে পানি খাওয়া জরুরি। খুব ঠান্ডা দিনে হালকা গরম পানি খেলে শরীরে আরামও লাগবে।

সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য আমাদের প্রত্যেকের চাহিদামত বিশুদ্ধ পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পানি বিশুদ্ধ না হলে পানি বাহিত বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে শরীরে।

(ঢাকাটাইমস/২৯নভেম্বর/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :