১৪ মাসে হেফাজতের চার আমির-মহাসচিবের ইন্তেকাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ১৩:৪৬ | প্রকাশিত : ২৯ নভেম্বর ২০২১, ১৩:১৬

নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী ইন্তেকাল করেছেন। সোমবার দুপুরে তিনি রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। এর মধ্য দিয়ে গত ১৪ মাসে সংগঠনটির দুইজন আমির এবং দুইজন মহাসচিবের ইন্তেকাল হলো।

এর আগে গত ১৯ আগস্ট ইন্তেকাল করেন হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর মারা যান হেফাজতের আরেক মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী। আর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যান সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এবং তৎকালীন আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

গত আগস্টে বাবুনগরীর ইন্তেকালের পর হেফাজতের আমির হন তারই মামা চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাবুনগর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তার বয়স নব্বইয়ের বেশি। আমির হওয়ার পর দুইবার তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তবে বর্তমানে তিনি অনেকটা সুস্থ।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হেফাজতে ইসলাম প্রথমবারের মতো ব্যাপক আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ইসলাম সম্পর্কে কটূক্তি হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে ওই বছরের ৬ এপ্রিল সংগঠনটি ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করে। তাদের এই শোডাউন ব্যাপক নজর কাড়ে বিভিন্ন মহলের। তবে এর ঠিক এক মাস পর ৫ মে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচিতে শাপলা চত্বরে অবস্থানকালে মধ্যরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে পালাতে বাধ্য হন হেফাজতের নেতাকর্মীরা। এরপর সংগঠনটি অনেকটা চুপসে যায়।

হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা আমির ছিলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। পরবর্তী সময়ে দেশের শীর্ষ এই আলেমের সরকারের সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। তার নেতৃত্বেই কওমি মাদ্রাসা দাওরায়ে হাদিসের সনদের সরকারি স্বীকৃতি পায়। এমনকি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শোকরিয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রীকে ‘কওমি জননী’ উপাধিও দেন আলেম-উলামারা।

আল্লামা শফী ইন্তেকাল করেন গত বছরের সেপ্টেম্বরে। তার ইন্তেকালের পর কাউন্সিলের মাধ্যমে হেফাজতের আমির নির্বাচিত হন মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী, যিনি আল্লামা শফীর কমিটির মহাসচিব ছিলেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, বাবুনগরীর নেতৃত্বাধীন কমিটিতে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক আলেমরা প্রাধান্য পান। মূলত তাদের কারণে হেফাজত ধীরে ধীরে সরকারবিরোধী অবস্থানে চলে যায় এবং মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে।

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনকে কেন্দ্র করে মার্চের ২৫, ২৬ ও ২৭ তারিখ দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ও তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৭ জন মারা যান। এসব ঘটনায় দায়ের করা মামলায় হেফাজতের অর্ধশতাধিক নেতা গ্রেপ্তার হন। তাদের অনেকেই এখনও কারাগারে রয়েছেন।

প্রচণ্ড চাপের মুখে ২৫ এপ্রিল কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে হেফাজত। গত ৭ জুন ৩৩ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে সেই কমিটিতে জায়গা পাননি রাজনৈতিক নেতা এবং বিতর্কিতরা।

(ঢাকাটাইমস/২৯নভেম্বর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ইসলাম বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :