রামপুরায় বাসচাপায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, সাতটি বাসে আগুন

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০২১, ০০:২৪ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২১, ০২:০১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর রামপুরায় বাসচাপায় মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয় নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় জনতা সড়ক অবরোধ করে নির্বিচারে বাস ভাঙচুর করেন ও আগুন দেন। অন্তত সাতটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে ৪০টি গাড়ি।

সোমবার রাত সাড়ে ১০ টার রামপুরা ডিআইটি রোডের টিভি সেন্টার ও ওয়াপদা রোডের মধ্যবর্তী স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ওই শিক্ষার্থী রামপুরা একরামুন্নেসা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া কথা ছিল বলে জানা গেছে। 

শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যুর পর তার এলাকাবাসী বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। তারা নির্বিচারে বাস ভাঙচুর করেন ও আগুন দেন।

নিহত মাইনুদ্দিনের এক সহপাঠী মো. সবুজ বলেন, পরীক্ষা শেষ হওয়ায় তারা পশ্চিম রামপুরা উলন রোডের বাসায় আড্ডা দিচ্ছিলেন। রাত পৌনে ১১ টার দিকে আড্ডা শেষে মাইনুল রাস্তা পার হয়ে ডিআইটি রোডের বাসায় যাচ্ছিল। তখন অনাবিল পরিবহনের বাসটিকে সে হাত দিয়ে থামানোর চেষ্টা করলেও সেটি তার উপর উঠিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী হাসিবুল ইসলামসহ কয়েকজন ঘটনাস্থলে বলছিলেন, বাসটি প্রথমে ওই শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দেয়। এতে সে পড়ে গেলে বাসটি দ্রুত পালাতে গিয়ে তাকে চাকায় পিষ্ট করে। এরপর আশপাশের লোকজন ধাওয়া করে বাসটি আটক করে। পুলিশ পুরো এলাকাটি ইট দিয়ে ঘিরে রেখেছে। পাশেই পড়েছিল মাইনুদ্দিনের লাশ। পুলিশ লাশটি গাড়িতে তুলতে চাইলেও বিক্ষুদ্ধ জনতা বাধা দেয়। তারা এক পর্যায়ে লাশ ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। তখন পুলিশ পিছু হটে। এক পর্যায়ে নিহতের বড় ভাই বাদশার সহায়তায় মাইনুলের লাশ মর্গে পাঠানো হয়।

মাঈনুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় লোকজন অন্তত ৪০টি বাস ভাঙচুর করেন। আগুন দেওয়া হয় ৭টি বাসে। এসময় আতঙ্কে অনেক বাসের ড্রাইভার গাড়ি রেখে পালিয়ে যান।  এতে পেছনের দিকে আসতে চাইলেও অনেক বাস ও প্রাইভেট গাড়ি আসতে পারেনি। এই ঘটনায় ওই এলাকায় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। বাড্ডা থেকে মালিবাগগামী গাড়িগুলোকে বনশ্রী-মাদারটেক রোড দিয়ে যেতে হচ্ছে। 

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া শাখা থেকে জানানো হয়, রামপুরায় বাসচাপায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সাতটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। বাসের আগুন বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি আব্দুল আহাদ বলেন, দায়ী বাসের চালক-হেলপারকে ঘটনার পর পরই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উপ-কমিশনার আরও বলেন, আমরা নিহতের ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন তারা ভাঙচুর বা আগুন দেননি। অন্য কেউ এসে এসব করেছে। এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়।

বর্তমানে রামপুরা-মালিবাগের সড়কটিতে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে ডিসি বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে আসছে। তারা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ ও আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পর সড়কটি খুলে দেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/এসএস/ইএস)