অবৈধ সম্পদ: সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর কারাদণ্ড

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১৫:৩১ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১৫:৫২

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি মামলায় সাবেক পুলিশ ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমানের খানের স্ত্রী মাহমুদা খানম স্বপ্নার চার বছরের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে অবৈধ উপায়ে অর্জিত ২১ লাখ ৫৪ হাজার ২৩৫ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদলতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

চার বছর কারাদণ্ডের মধ্যে ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬(২) ধারায় এক বছর এবং ২৭ (১) ধারায় তিন বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দণ্ডিত মাহমুদা খানম স্বপ্না সাবেক পুলিশ ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমানের খানের স্ত্রী। তাদের বাড়ি ঝালকাঠি সদর থানার রাজপাশা গ্রামে।

২০১৬ সালের ২৯ জুন রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট জমা দেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি মিসেস মাহমুদা খানম স্বপ্না ২০১৫ সালের ১৪ মে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ১৮৩ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন এবং অর্জিত এক কোটি ৭১ লাখ তিন হাজার ৪৫ টাকার সম্পদের মধ্যে ৪১ লাখ ৪১ হাজার ২৬৯ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটন করেছেন।

মামলায় বলা হয়, মাহমুদা খানম স্বপ্না একজন গৃহিণী। তার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান একজন পুলিশ পরিদর্শক ছিলেন। তিনি নিজ নামে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, গুলশান, ঢাকায় ২০০৫ সালের ২৪ মার্চ রেজিস্ট্রিকৃত সাফ কবলা দলিলের উত্তরা আবাসিক এলাকার ১৪নং সেক্টরের ১৮নং রাস্তার ৩৮নং প্লটে তিন কাঠা জমি কিনেন। যার ক্রয় মূল্য ছয় লাখ ৮২ হাজার টাকা। ওই জমিতে তিনি প্রতি তলা ১৭৪৬.২৫ বর্গফুট আয়তনের সাত তলা বাড়ি নির্মাণ করেন। গণপূর্ত

অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের মাধ্যমে সরেজমিনে বাড়িটির পরিমাপ গ্রহণ করে নির্মাণ ব্যয় এক কোটি ৬১ লাখ ১২ হাজার ১৮৩ টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু আসামি দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে বাড়িটির নির্মাণ ব্যয় প্রদর্শন করেছেন এক কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে তিনি সম্পদ বিবরণীতে গোপন করেছেন ১৭ লাখ ৬২ হাজার ১৮৩ টাকা। এছাড়া তিনি আসবাবপত্র ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা, ব্যবসার পুঁজি এক লাখ ৯২ হাজার ৩৩৬ টাকা ও নগদ অর্থ এক হাজার ৮০২ টাকাসহ মোট তিন লাখ আট হাজার ৮৬২ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেন। এতে তার অর্জিত সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় এক কোটি ৭১ লাখ তিন হাজার ৪৫ টাকা।

এই সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তিনি ২০১০-১১ করবর্ষ থেকে ২০১৪-১৫ করবর্ষ পর্যন্ত ব্যবসার আয়, স্বর্ণালংকার বিক্রি, ব্যাংক ঋণ, জমি বিক্রি, গৃহ সম্পত্তির আয় ও অন্যান্য উৎস থেকে এক কোটি ৩৩ লাখ ৯৬ হাজার ৭২৬ টাকা আয় প্রদর্শন করেন। যার মধ্যে তার পারিবারিক ব্যয় রয়েছে চার লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ফলে পারিবারিক ব্যয় বাদে তার সম্পদের পরিবৃদ্ধি থাকে এক কোটি ২৯ লাখ ৬১ হাজার ৭৭৬ টাকা। পক্ষান্তরে, তার অর্জিত সম্পদের মূল্য এক কোটি ৭১ লাখ তিন হাজার ৪৫ টাকা। অর্থাৎ তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মূল্য 

৪১ লাখ ৪১ হাজার ২৬৯ টাকা। এভাবে তিনি সম্পদ বিবরণীতে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ১৮৩ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে ও ৪১ লাখ ৪১ হাজার ২৬৯ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক দখলে রেখেছেন।

(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/আরজেড/জেবি)