সব দাবি আদায়ে আন্দোলন চালানোর ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০২১, ১৯:০৭

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

শুধুমাত্র ঢাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস দেওয়ার ব্যাপারে বাস মালিকরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা প্রত্যাখান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। নিরাপদ সড়কের জন্য ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, নিরাপদ সড়কের জন্য আগে দেওয়া ৯ দফা দাবির বাকিগুলো মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কর্মসূচির আওতায় বুধবার সারাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করবেন তারা।

শর্তসাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য বুধবার থেকে বাসে হাফ পাসের ঘোষণা দেন পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ্। ঢাকার রমনায় সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়। এরপর বিকালে ঢাকার বনানীতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা মালিক সমিতির এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

এর আগে দুপুর ২টার দিকে স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইনজামুল হকের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের কক্ষে যায়।

সেখান থেকে বের হয়ে ইনজামুল হক বলেন, আলোচনা আশানুরূপ ছিল না, আমাদের দাবি মানেননি তারা। দাবি পূরণের বিষয়ে আশ্বাসও দেননি। এ কারণে আগামীকাল (বুধবার) সারা দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।

বিকাল সোয়া চারটার দিকে বিআরটিএর সামনে থেকে মঙ্গলবারের মতো আন্দোলন শেষ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে শিক্ষার্থীরা জানান, ৯ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন ও কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এদিকে বনানীর বিআরটিএ ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থানকে কেন্দ্র করে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি

১. দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শিক্ষার্থীসহ সব সড়ক হত্যার বিচার করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

২. ঢাকাসহ সারা দেশে সব গণপরিবহনে (সড়ক, নৌ, রেলপথ ও মেট্রোরেল) শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।

৩. গণপরিবহনে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং জনসাধারণের চলাচলের জন্য যথাস্থানে ফুটপাত, ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে।

৪. সড়ক দুর্ঘটনায় আহত যাত্রী এবং পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।

৫. পরিকল্পিত বাস স্টপেজ ও পার্কিং স্পেস নির্মাণ এবং এগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে।

৬. দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এবং যথাযথ তদন্তসাপেক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা মহলকে নিতে হবে।

৭. বৈধ ও অবৈধ যানবাহন চালকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বৈধতার আওতায় আনতে হবে এবং বিআরটিএ’র সব কর্মকাণ্ডের ওপর নজরদারি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঢাকাসহ সারা দেশে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা অবিলম্বে স্বয়ংক্রিয় ও আধুনিকায়ন এবং পরিকল্পিত নগরায়ণ নিশ্চিত করতে হবে।

৯. ট্রাফিক আইনের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিষয়টিকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করতে হবে।

ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/কারই/এমআর