তরুণ উদ্যোক্তা লাবিবের ‘এনে দাও’

প্রকাশ | ৩০ নভেম্বর ২০২১, ২০:২৭

কাজী রফিক, ঢাকাটাইমস

২০২০ সালের ৭ মার্চ। বাংলাদেশে নেমে আসে করোনার থাবা। কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে মানুষ যখন ঘরবন্দি, তখন মানুষের সেবায় এগিয়ে আসেন তাহমিদ হুদা লাবিব। ২০২০ সালের আগস্টে যাত্রা শুরু করে লাবিবের প্রতিষ্ঠান ‘এনে দাও’। কল বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কলের মাধ্যমে অর্ডার অনুযায়ী পণ্য কিনে তা পৌঁছে দিতে শুরু করেন ক্রেতার ঘর পর্যন্ত। সেখান থেকেই শুরু। করোনার প্রাদুর্ভাব মাঝে কিছু কমে গেলে কমে আসে তার এই সেবার চাহিদাও। ততদিনে লাবিবও নিজের সেবার মানকে বৃদ্ধি করেছেন। রূপ দিয়েছেন পুরদস্তর একটি প্রতিষ্ঠানে। গড়ে তুলেছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘এনে দাও ডটকম ডট বিডি’।

লাবিব উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বাংলাদেশে পড়াশোনা করলেও উচ্চ শিক্ষা নিয়েছেন মালয়েশিয়া থেকে। পড়াশোনার পাশাপাশি সেখানে তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অভিজ্ঞতা নিয়েছেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে। লাবিবের ভাষায়, ই-কমার্স শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি একটি সেবা।

সেই সেবার ব্রত নিয়ে কাজ করে চলেছেন এই তরুণ উদ্যোগতা। এক বছর আগে যাত্রা শুরু করা ‘এনে দাও ডটকম ডট বিডি’ প্রতিষ্ঠানে এখন কাজ করছেন এক ডজন কর্মী। বেড়েছে সেবার পরিধি।

প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে লাবিব জানান, উন্নত বিশ্বে ই-কমার্স ব্যবসা যেভাবে পরিচালিত হয়, ঠিক সেভাবেই নিজের প্রতিষ্ঠানটিকে গড়ে তুলেছেন তিনি। প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে সেবা নির্ভর প্রত্যয়ে।

লাবিব বলেন, ‘ই-কমার্স অনেক আছে। কিন্তু সঠিক পণ্যের নিশ্চয়তা, ক্রেতা সেবায় সন্তুষ্ট হবে, এমন ই-কমার্স কম। কিছুদিন আগেও সবাই ই-কমার্স মানে বুঝত, কম দামে বাইক ডেলিভারি। সেগুলো থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, সেবা নির্ভর একটা ই-কমার্স করব। সকল আসল পণ্য নিয়ে। আসল পণ্য বলতে আমরা বুঝাচ্ছি, যারা সরাসরি আমদানি করে বা উৎপাদন করে, তাদের থেকে পণ্য নিয়ে আমি আমার কাস্টমারকে দিব। বাজারে যেমন নকল পণ্যের একটা সুযোগ থাকে সেখানে সেটা থাকবে না।’

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ই-কমার্স খাতকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দিয়েছে। কিছু ই-কমার্সের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে। এমন পরিস্থিতিতে ‘এনে দাও’ কেমন সাড়া পাচ্ছে জানতে চাইলে লাবিব বলেন, ‘বর্তমানে সাড়া কিছুটা কম। তথাকথিত ই কমার্স নিয়ে চলমান সমস্যার কারণে অনেকেই ই-কমার্সের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছিল। তবে ক্রেতারা খুবই স্মার্ট। তারা এখন আসল-নকলের পার্থক্যটা বোঝেন। ফলে মূল ই-কমার্সগুলো প্রতি তারা এখন ঝুঁকছেন। যেমন, আমরা ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পণ্য দিচ্ছি। ফলে ক্রেতাদের বিব্রত হওয়ার কোনো সুযোগ থাকছে না।’

দেশের ই-কমার্স খাত কতটা সম্ভাবনাময়? এমন প্রশ্নের জবাবে এই তরুণ উদ্যোক্তা বলেন, ‘বাংলাদেশে ই-কমার্সের ভালো ভবিষ্যৎ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের বাইরে দেখেছি, সেখানে ই-কমার্সে সেবাটাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এখানে ডিসকাউন্টের নামে ই-কমার্স চলছে, তবে বাংলাদেশকেও ওই দিকেই আসতে হবে। ভালো সার্ভিস ও ভালো পণ্য পেলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে লাভবান হবে।’

ই-কমার্স বাজারে প্রতিযোগিতা প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী।

(ঢাকাটাইমস/৩০নভেম্বর/কারই/ইএস)