জমি দখলে নিতে ভুয়া রিট, কক্সবাজারের লিটনের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ
সরকারি জমি দখলে নিতে ভুয়া সিল ও নথি জাল করে একই বিষয়ে পৃথক পাঁচটি রিট করার ঘটনায় ফেঁসে গেছেন কক্সবাজারের শহিদুল ইসলাম লিটন নামে এক ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে রেজিস্ট্রারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
লিটন কক্সবাজারের বদরখালি চকরিয়ার বাসিন্দা। তিনি রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি লি. এর সাধারণ সম্পাদক।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সাত হাজার একর সরকারি জমি দখলের অভিপ্রায়ে নথি জাল, মন্ত্রণালয়ের সিল ও তথ্য গোপন করে হাইকোর্টে একাধিক রিট করেছেন লিটন। এসব বিবেচনায় আদালত তার রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করতে রেজিস্টারের প্রতি নির্দেশ দেন।
বুধবার এ বিষয়ে এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলুরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত। পরে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, শহিদুল ইসলাম লিটন কক্সবাজারের রামপুর মৌজার ৭০০০ একর সরকারি জমি দখল করার জন্য ভুয়া নথি ও জাল সিল তৈরি করেন। একই বিষয়ে হাইকোর্টে ৫টি রিট আবেদন করেন। প্রথম রিটটি দায়ের করেন ২০১৮ সালের ৭ মে। লিটন তার আবেদনে দাবি করেন এই সম্পত্তি সিএস রেকর্ড অনুযায়ী তার পূর্ব পুরুষদের।
লিটনের দাবি, ১৯০৩ সালে সুন্দরবনের নামে এই সম্পত্তি অধিভুক্ত করার কথা ছিল সরকারের। কিন্তু করা হয়নি। এরপর লিটন এই সম্পত্তি তার নামে নিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ‘মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যালয়’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে আবেদন করেন। পরে এই অধিদপ্তর আবেদনটি নিষ্পত্তি করেছে বলে রিটে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই নামে কোনো অধিদপ্তর নেই। এটি একটি ভুয়া ঠিকানা।
এছাড়া লিটনের চিঠিতে স্বাক্ষর করা ব্যক্তির কোনো সন্ধান পায়নি মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়। সিলটি ভুয়া। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় লিটনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে নির্দেশ দেন আদালত।
অমিত দাশ গুপ্ত আরও বলেন, গতকাল (৩০ নভেম্বর) আদালতে হাজির হয়েছিল শহিদুল ইসলাম লিটন। ভুয়া রিটের পর তিনি আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ১ ডিসেম্বর আদালতে লিটনের উপস্থিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তিনি উপস্থিত হননি। এরপর আদালত এ আদেশ দেন।
(ঢাকাটাইমস/০১ডিসেম্বর/এআইএম/ইএস)