নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ১১ দফা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬:২০ | প্রকাশিত : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:৫২

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ১১ দফা দাবি দিয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা প্রতিদিন রাজধানীর রামপুরা সড়কের দুপাশে দাঁড়িয়ে প্রতিদিন এক ঘণ্টা মানববন্ধন করবেন।

বৃহস্পতিবার শুরু হতে যাওয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে সড়ক অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি আপাতত প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ২টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়ার ঘোষণার সময় নতুন এ কর্মসূচি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ১১ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত রামপুরায় সড়কের দুপাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করবে বলে জানিয়েছেন।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার বেলা ১১টায় শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে রামপুরা ব্রিজের ওপর অবস্থান নেন। ঢাকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা ইমপেরিয়াল কলেজ, একরামুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভে যোগ দেন।

এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গণপরিবহণ থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বাসগুলোকে ওই স্থানেই আটকে দেন। এতে সড়কের দুপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রামপুরায় শিক্ষার্থী মাঈনুদ্দিন নিহতের বিচারসহ ১১ দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীরা ১১ দফা দাবি, প্রস্তাবনা ও সড়ক নীতিমালা উত্থাপন করেন। খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী সোহাগী সায়মা ও ঢাকা ইমপেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী নাদিমুর রহমান জুয়েল এসব দাবি উত্থাপন করেন।

শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবিগুলো হচ্ছে:

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নাঈম হাসান ও মাইনুদ্দিনের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।

সারা দেশের গণপরিবহণে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ জন্য দিন-রাত বা ছুটির দিনসহ কোনো শর্ত জুড়ে দেওয়া যাবে না। বর্ধিত বাসভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সব রুটে বিআরটিসির বাস বাড়াতে হবে।

সব ধরনের পরিবহণে নারীদের অবাধ যাত্রা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সঙ্গে সৌজন্য ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

লাইসেন্সবিহীন চালককে নিয়োগদানকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস কার্যক্রম ও লাইসেন্স দানে বিআরটিএর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সব সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

সব রুটে প্রতিযোগিতা বন্ধে এক গ্রুপ বা কোম্পানির মাধ্যমে সব বাস চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। বাস অনুযায়ী মালিকদের মধ্যে লাভের টাকা বণ্টনের নিয়ম করতে হবে।

শ্রমিকের নিয়োগপত্রে পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। বাসচালক ও হেলপারদের চুক্তির পরিবর্তে সব গণপরিবহণ টিকিট পদ্ধতিতে চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।

গাড়ি ও চালকের কর্মঘণ্টা একনাগাড়ে ছয় ঘণ্টার বেশি হতে পারবে না। বাসে দুজন চালক ও দুজন সহকারী থাকতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল তৈরি করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিকদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহণ আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ট্রাক ও ময়লার গাড়ি চলাচলের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নির্ধারণ করতে হবে।

মাদক প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রসঙ্গত, সোমবার দিবাগত রাতে রামপুরা বাজার ও টিভি সেন্টারের মাঝামাঝি সোনালী ব্যাংকের সামনে ডিআইটি রোডে অনাবিল পরিবহণের একটি বাসের চাপায় স্থানীয় একরামুন্নেছা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া মাঈনুদ্দিন (১৭) নিহত হয়। এ ঘটনার পর ১২টি বাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধরা। গণপিটুনিতে বাসচালক জ্ঞান হারান। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চালকের সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/০১ডিসেম্বর/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :