গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ ও শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, গ্রেপ্তার ৩

শেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৮:৫৪

শেরপুরের শ্রীবরদীতে এক গৃহবধূকে (২০) গণধর্ষণ এবং নকলায় ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছে। ধর্ষণের সাথে জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও যৌন হয়রানির অভিযুক্তকে খুঁজছে পুলিশ ।

শ্রীবর্দীতে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার লঙ্গরপাড়া গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে কামরুজ্জামান (২৩) ও দুদু মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৭) এবং পাশের জামালপুর জেলার দেউরপাড়া গ্রামের আব্দুল সেকের ছেলে আয়নাল হক (৫০)। আয়নাল হক উপজেলার লঙ্গরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী।

এ ঘটনায় গেল মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শ্রীবরদী থানায় মামলা করেছেন। পরে শ্রীবরদী থানা পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেন।

অপরদিকে নকলায় যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা পরিতোষ সাহা পালিয়ে রয়েছে।

মামলার নথি, পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে জেলার শ্রীবর্দীর ওই গৃহবধূ উপজেলার উত্তর খড়িয়া গ্রামের বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। কিছুদিন আগে গ্রেপ্তার কামরুজ্জামান গৃহবধূর কাছ থেকে এক হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। গত সোমবার দুপুরে ওই গৃহবধূ কামরুজ্জামানের কাছে তার পাওনা টাকা চান। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় টাকা দেওয়ার কথা বলে কামরুজ্জামান ও তার সহযোগী শফিকুল ইসলাম গৃহবধূকে লঙ্গরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে গেলে নৈশ প্রহরী আয়নাল হক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক খুলে দেন এবং ওই দুই যুবকের পরামর্শ অনুযায়ী গৃহবধূকে বিদ্যালয়ের চারতলা ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখেন। পরে সোমবার রাত দশটার দিকে কামরুজ্জামান, শফিকুল ও নৈশ প্রহরী আয়নাল জোরপূর্বক ওই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করেন।

এক পর্যায়ে তারা ধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন এবং এ ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেন। পরে ভুক্তভোগী তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন এবং অভিভাবকদের কাছে ধর্ষণের ঘটনাটি জানান।

বুধবার বিকালে শ্রীবরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবুল হাশিম বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে গ্রেপ্তার তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১-২জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা আবুল হাশিম আরও জানান, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। ডাক্তারি পরীক্ষা করার জন্য ভুক্তভোগী গৃহবধূকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অপরদিকে গেল মঙ্গলবার বিকালে নকলা উপজেলার ভুক্তভোগী ও বানেশ্বরদী ইসলামী দাখিল মাদরাসার ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী গলা ব্যাথার ওষুধের জন্য তার নানিকে সাথে নিয়ে উপজেলা শহরের সাহা মেডিকেল হলে অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা পরিতোষ সাহার কাছে যায়।

এসময় পরিতোষ ওই শিক্ষার্থীর গলা পরীক্ষা না করে তার নানির সামনেই শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়। কিছুক্ষণ পর বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয় জনতা সাহা মেডিকেল হলের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ওই শিক্ষার্থীকে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। তবে এর আগেই কৌশলে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত চিকিৎসক পরিতোষ সাহা।

স্থানীয় সূত্র আরো জানায়, ৫-৭ বছর আগে নকলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরে পরিতোষ সাহা উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত থাকার সময় আরেক রোগীকে নিয়ে যৌন নিপীড়নের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। শাস্তিস্বরূপ তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল।

অন্যদিকে এ বিষয়টিকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন, অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা পরিতোষ সাহা।

নকলা থানার ওসি মুশফিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। রাতেই পরিতোষ সাহার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

(ঢাকাটাইমস/১ডিসেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :