বিএনপিতে নেতৃত্ব সংকট দেখছেন জি এম কাদের

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) চরম নেতৃত্ব সংকট দেখছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের।

শুক্রবার দুপুরে গাজীপুরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে দলটির এক সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি। গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জি এম কাদের।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অনেক নেতাই জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগে আর জায়গা নেই, এত নেতা-কর্মীর সংকুলান হচ্ছে না আওয়ামী লীগে। কেউ ইচ্ছে করলেই আওয়ামী লীগে যোগ দিতে পারছে না। আবার বিএনপির অবস্থা হতাশাব্যঞ্জক। বিএনপিতে চরম নেতৃত্ব সংকট চলছে। দেশের মানুষ বিএনপির ভবিষ্যত নিয়ে শংকিত। তাই দেশপ্রেমিক ও আদর্শবান মানুষের সামনে জাতীয় পার্টি হচ্ছে একমাত্র রাজনীতির বিকল্প শক্তি।’

দেশে এখন আর সুশাসন নেই উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘সাংবিধানিকভাবেই দেশে একনায়কতন্ত্র চলছে। সংবিধান অনুযায়ী গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনকালে গণতন্ত্র মুক্তি পাক বলে দেশের মানুষ শ্লোগান দিতে পেরেছে। দেশের মানুষ এখন কি স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক শ্লোগান দিতে পারে? এ থেকেই বোঝা যায় দেশের মানুষ কতটা গণতন্ত্র উপভোগ করতে পারছেন।’

জাপা চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ এক বুক প্রত্যাশা নিয়ে জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। তারা আবারো জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়। ১৯৯১ সালের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের সাথে কথা রাখেনি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশের মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। এক সময় ব্রিটিশরা বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল, তারপর বৈষম্য সৃষ্টি করেছিল পশ্চিম পাকিস্তান। কিন্তু এখন দুটি দল মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে।

জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি না করলে কেউ চাকরি পায় না, ক্ষমতাসীন দল না করলে ব্যবসা করতে পারে না কেউ। দেশের মানুষ এখন বলেন, এরশাদের শাসনামলে বেশি সুশাসন ভোগ করেছেন। তাই আবারও তারা জাতীয় পার্টির শাসনামল ফিরে পেতে চায়।’

কিছু সমিতি ও ইউনিয়ন পরিবহন সেক্টরকে জিম্মি করে রেখেছে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারের কিছু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা সাধারণ মানুষের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিচ্ছে পরিবহন সেক্টরের সাথে আঁতাতের মাধ্যমে। তাই গণপরিবহনে নৈরাজ্য কমছে না।’

প্রতি বছর দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে অভিযোগ করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা বিদেশি সূত্রে জানতে পারছি টাকা পাচারের খবর। দেশের কোন সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করছে না। আমরা সংগঠনকে শক্তিশালী করতেই প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আমরা চাই জাতীয় নির্বাচনের আগেই নির্বাচনী ব্যবস্থা ঠিক করতে হবে।

গাজীপুর মহানগর দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য আইনজীবী মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, আলহাজ্ব আব্দুস সাত্তার মিয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মিসেস শেরীফা কাদের এমপি।

গাজীপুর মহানগরের আহ্বায়ক এম এম নিয়াজ উদ্দিন এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মো. মোশারাফ হোসেনের সঞ্চালনায় দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব মো. বেলাল হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা ফারহীন হাসান, ফারুক, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, যুগ্ম মহাসচিব মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক-২ এম এ রাজ্জাক খান, প্রচার সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুম, তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিন্টু, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইসহাক ভূঁইয়া, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম সরকার, যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ আইনজীবী আবু তৈয়ব, কেন্দ্রীয় নেতা- আবু সাঈদ স্বপন, জয়নাল আবেদীন, সরদার নজরুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, শরিফুল ইসলাম শরিফ, ইঞ্জিনিয়ার এহালান উদ্দিন, শাহিন আরা সুলতানা, ফিরোজ মাহমুদ নাসির, রেজাউল করিম, মোতাহার হোসেন, মো. জাকির হোসেন, পবন প্রমুখ।

ঢাকাটাইমস/৩ডিসেম্বর/কারই/এমআর